—ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা আধিকারিকের দফতরের সামনে থাকা গ্যারাজ থেকে চুরি হয়ে গেল একটি ছোট গাড়ি। অন্য একটি গাড়ির দরজা খুলে ফেললেও স্টিয়ারিংয়ের লক খুলতে না পারায় সেই গাড়িটি নিয়ে যেতে পারেনি চোরেরা। রবিবার সকালে বিষয়টি নজরে আসে নিরাপত্তা কর্মীদের। তারপরই শোরগোল পরে যায় ক্যাম্পাসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বার ওই ধরনের ঘটনা ঘটল বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকদের একাংশ। ক্যাম্পাসের গেটগুলিতে ২৪ ঘন্টা নিরাপত্তারক্ষী থাকার কথা। গ্যারাজের পাহারাতেও একাধিক নিরাপত্তারক্ষী থাকেন বলেই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তা সত্ত্বেও কিভাবে দুষ্কৃতীরা গাড়ি চুরি করে পালালো তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। চুরির ঘটনায় ক্যাম্পাসের ভিতরের কেউ জড়িত থাকতে পারে বলেই সন্দেহ করছেন আধিকারিক ও শিক্ষকদের একাংশ।
রেজিস্ট্রার দিলীপকুমার সরকার জানিয়েছেন, আজ, সোমবার সকাল ১১ টার মধ্যে গোটা ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট তাঁর কাছে জমা দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা আধিকারিককে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তা গফিলতি নিয়ে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাটিগাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
খবর শুনে সকালেই ক্যাম্পাসে যান রেজিস্ট্রার। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্যও। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ির চালক শ্যামল মণ্ডলের দাবি, রবিবার সকাল পৌনে ছ-টা নাগাদ তিনি চুরি যাওয়া গাড়িটিকে বাতাসি বাজারের কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন। খড়িবাড়ির বাসিন্দা শ্যামল প্রতিদিন সকালে বাস ধরে ক্যাম্পাসে কাজে যোগ দিতে আসেন। তিনি বলেন, ‘‘এ দিন বাস থেকেই গাড়িটিকে দেখেছিলাম। ভেবেছিলাম কোনও কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ কোথাও যাচ্ছেন। পরে ক্যাম্পাসে এসে চুরির খবর শুনি।’’ শ্যামলের কথার সূত্র ধরেই পুলিশের একাংশের অনুমান গাড়িটি খড়িবাড়ি হয়ে বিহারে বা নেপালে পাচার করা হতে পারে। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘ক্যাম্পাস থেকে চুরির ঘটনায় আমি হতবাক। আজ, সোমবার বৈঠক করে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেওয়া হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল তিনটি গেট রাতে বন্ধ থাকে। সেই গেটগুলি দিয়ে কোন গাড়ি রাতে যায়নি বলেই জানিয়েছেন নিরাপত্তা আধিকারিক সজল চক্রবর্তী। তবে ক্যাম্পাসের চা বাগান লাগোয়া এলাকায় স্থানীয়দের যাতায়াতের জন্য সীমানা প্রাচীর ভেঙে একাধিক যাতায়াতের রাস্তা তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান ক্যাম্পাস সংলগ্ন নিমতলা এলাকার সেরকমই কোন রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতিরা। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। কোনও চক্র বা ক্যাম্পাসের ভিতরের কোনও কর্মী ঘটনায় জড়িত কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিহার ও নেপাল সীমান্ত লাগোয়া সমস্ত থানা ও এসএসবিকেও বার্তা পাঠান হয়েছে।’’