কুপনকে শুভেচ্ছাবার্তা। নিজস্ব চিত্র।
ছিটমহল বিনিময় হওয়ার পরে, সাবেক ছিট থেকে ভারতের মূল ভূখণ্ডে এসেছিলেন কুপন রায়। তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে আগেই। অভাব নিত্যসঙ্গী। মেধা এবং ইচ্ছাশক্তিতে ভর করেই পর পর দু’বার ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান তিনি। টাকার অভাবে প্রথম বার ডাক্তারি পড়ার সুযোগ হাতছাড়া হলেও এ বার অনেকেই পাশে দাঁড়ানোয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন কুপন।
সম্প্রতি এই খবর পৌঁছয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর শুভেচ্ছাপত্র নিয়ে হলদিবাড়ির সাবেক ছিটের স্থায়ী শিবিরে হাজির হন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। সঙ্গে ছিলেন মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশচন্দ্র অধিকারী, মহকুমাশাসক রামকুমার তামাং, হলদিবাড়ির পুরপ্রধন শঙ্করকুমার দাস প্রমুখ। সকলের উপস্থিতিতেই কুপনের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা ও ফুল দেওয়া হয়। কুপনের মা সরবালাদেবীর হাতে ছেলের পড়াশোনার খরচ বাবদ কিছু টাকাও তুলে দেওয়া হয়।
এ দিন কুপন জানান, ২০১৫ সালে কোটভাজনি ছিট থেকে মায়ের হাত ধরে ভারতের মূল ভূখণ্ডে আসেন। তাঁর বাবা নেন্দু রায়ের মৃত্যু হয়েছে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে। টাকার অভাব নিত্যসঙ্গী। বললেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় পর পর দু’বার ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাই। টাকার অভাবে আগের বার পড়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। এ বার সবাই পাশে দাঁড়ানোয় ভর্তি হলাম। মুখ্যমন্ত্রী শুভেচ্ছাপত্র পাঠিয়েছেন, এ অনেক বড় পাওনা। এখন একটাই লক্ষ্য, ভাল করে পড়াশোনা করে আগামীতে মানুষের সেবা করা।’’
উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘আমরা চাই, কুপন আরও এগিয়ে যান। রাজ্য সরকার ওঁর পাশে আছে।’’ স্থানীয় বিধায়ক পরেশচন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘‘খুব গর্বের বিষয়। এমন পরিবারের ছেলে একমাত্র অধ্যবসায়ের জোড়ে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেল। আমরা ওর সঙ্গে থাকব।’’
সাবেক ছিটের স্থায়ী বাসিন্দা জয়প্রকাশ রায় বলেন, ‘‘কুপন বরাবর পড়াশোনায় ভাল। আমাদের আশা ছিল, ও এক দিন অবশ্যই ডাক্তার হবে। ও ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাওয়ায় আমরা সবাই খুশি।’’