ফাইল চিত্র।
শান্তি আলোচনা শুরুর প্রচেষ্টার মধ্যেই নিজেদের কর্মসূচি বহাল রাখার কথা জানিয়ে দিলেন কেএলও প্রধান জীবন সিংহ।
‘শহিদ দিবসের’ বার্তা নিয়ে শনিবার ফের একবার ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেন জীবন। যে ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, একটি জঙ্গলের ভিতরে দাঁড়িয়ে বার্তা দিচ্ছেন তিনি। তাঁর পিছনে সশস্ত্র অবস্থায় রয়েছেন তাঁর এক সঙ্গী। ভিডিয়ো বার্তায় জীবন জানান, ২৬ ডিসেম্বর শহিদ দিবস পালন করবেন তাঁরা। তাঁদের সংগঠনের কর্মীদের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ হত্যা করেছেন বলেও সমালোচনা করেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহতদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানানোর কথা জানিয়েছেন জীবন।
কিছু দিন আগেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা শান্তি আলোচনার আহ্বান জানান কেএলওকে। সেই আহ্বানে সাড়াও দেয় সংগঠনটি। জীবন সিংহ নিজে ওই আলোচনার বার্তাকে স্বাগত জানান। অসমের মুখ্যমন্ত্রী থেকে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ধন্যবাদও জানান তিনি। পরে কেএলওর বিদেশ সচিব কোচ পাভেলও ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে আলোচনাকে স্বাগত জানান। তার মধ্যেই শহিদ দিবস পালনের ভিডিয়ো বার্তায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সমালোচনাও করা হয়েছে।
গোয়েন্দারা মনে করছেন, সরকারের উপর চাপ তৈরি করার জন্যই জীবন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে। দ্বিতীয়ত, জীবন কোনও ভাবেই বুঝতে দিতে চাইছেন না, তাঁর সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমিকা নিয়েও যে খুব একটা খুশি নন, সে বার্তাও দিতে চেয়েছেন তিনি। কোচবিহারের এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘জীবনখুব পরিকল্পনা করেই পা ফেলছে। শান্তি আলোচনায় তাঁর দাবিকে মজবুত অবস্থানে রাখতেই কৌশল নিয়েছেন তিনি।’’
শান্তি আলোচনা শুরুর চেষ্টার মধ্যেই শহিদ দিবস নিয়ে জীবনের এই ভিডিয়ো বার্তাকে ঘিরে সতর্কও পুলিশ। আলিপুরদুয়ারের এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “মাথায় রাখতে হবে, কেএলও-র সঙ্গে শান্তি আলোচনার কথা বলা হলেও, সেই আলোচনা এখনও শুরু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য বছরের মতো এবারও কেএলওর শহিদ দিবসের কর্মসূচিকে ঘিরে কোনও ঝুঁকি নেওয়া হচ্ছে না।”
এক সময় কেএলও অধ্যুষিত এলাকা বলে পরিচিত ছিল আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম। ওই এলাকারই বাসিন্দা জীবন সিংহ। কুমারগ্রামের পাশেই আবার অসম। পুলিশ সূত্রের খবর, কেএলও-র শহিদ দিবসের আগে সেই অসম সীমানায় নজরদারি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সীমানা দিয়ে সন্দেহভাজন কেউ যাতায়াত করছেন কি না সে দিকে সব সময়ে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। নজরদারি চলছে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতেও। সেই সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় চলছে নাকা চেকিং।
পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, বেশ কয়েক জন আত্মসমর্পণকারী কেএলও জঙ্গির সঙ্গীর সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলছে তারা। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে বলেছেন, “ভিডিয়োটা দেখেছি। গোটা বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। নিরাপত্তার সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া রয়েছে।”