বৈঠকে কৈলাস। নিজস্ব চিত্র।
বুথ কমিটির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে কাজ করতে হবে পঞ্চায়েতে। শনিবার মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দলীয় জনপ্রতিনিধিদের এমনই নির্দেশ দিলেন মালদহের বিজেপি নেতৃত্ব। এমনকি, সম্পর্ক রেখে কাজ করতে না পারলে বোর্ড গঠনের আড়াই বছর হয়ে গেলে প্রধানদের অপসারণেরও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। আর দলীয় নেতৃত্বদের বক্তব্যে হইচই পড়ে যায় বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের অন্দরেও। সেই বৈঠকে যোগ দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের রাজ্য সরকার সম্মান দিচ্ছে না বলে দাবি করে সরব হন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গী।
এদিন দুপুর ১২টা থেকে মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে দলীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বিজেপি নেতারা। দুই দফায় চলে বৈঠক। মধ্যহ্নভোজনের আগে বৈঠকে দলীয় জনপ্রতিনিধিদের কড়া নির্দেশ দেন বিজেপির জেলা নেতৃত্বদের একাংশ। তাঁদের দাবি, বুথ কমিটির সঙ্গে সম্পর্ক না রেখে পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন। অনেকে বিরোধীদের সঙ্গেও গোপনে হাত মিলিয়ে পঞ্চায়েতে কাজ করছেন। আর তাতে দুর্নীতির অভিযোগও সামনে আসছে। বিধানসভা ভোটের আগে বৈঠকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। বৈঠক সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের নির্দেশ মেনে না চললে বোর্ড গঠনের আড়াই বছর হয়ে গেলে পঞ্চায়েত ভেঙে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এমন কি, এও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রতীকও দেওয়া হবে না।
এ দিনের বৈঠকে ছিলেন ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি ছাড়াও সাংসদ, বিধায়ক এবং বিজেপির রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু। হেলিকপ্টার বিভ্রাটের জন্য বিকেলে বৈঠকে যোগ দেন কৈলাস। তিনি বক্তব্য রাখার সময় দরজা খুলে দেওয়া হয়। আদিবাসী নাচে বরণ করা হয় কৈলাসকে। রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “রাজ্যে জনপ্রতিনিধিদের সম্মান নেই। সংসদে দেশের প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসনের কর্তাদের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উন্নয়নের জন্য বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছিলেন। অথচ, বাংলায় সেই দিশা বৈঠক হয় না।”
বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের সরকারি কাজে ডাকা হয় না বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে।” এর পাল্টা সমালোচনা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মৌসম নুরও। তিনি বলেন, “উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড রাজ্য ছাপিয়ে মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছে। কেন্দ্র তা করে দেখাতে পারেনি।”
পরে সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ পুরাতন মালদহ শহরের পালপাড়া এলাকায় দলীয় চায়ে পে চর্চা কর্মসূচিতে যোগ দেন কৈলাস। সেই কর্মসূচিতেই তৃণমূল ছেড়ে ফের বিজেপিতে যোগ দেন পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর নৃপেন পাল। তিনি আগে বিজেপিতে ছিলেন। পরে যোগ দেন তৃণমূলে। তাঁকে দলে নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানান বিজেপির ওই এলাকার আদি নেতৃত্ব। জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।