নোট বাতিল পর্বের পরে চা শ্রমিকদের নগদ সঙ্কট নিয়ে সরব হলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। শনিবার শিলিগুড়িতে উপভোক্তা লোক আদালতের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিরা। উপভোক্তাদের সুবিচার দেওয়া এবং লোক আদালতের ভূমিকা প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখার মাঝেই নোট সঙ্কটের প্রসঙ্গ তোলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। চা বাগানে পর্যাপ্ত নগদ না পৌঁছনো নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পুরোনো পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট বাতিল হওয়ার পরে চা বাগানে যথাযথ নোটের সরবরাহ না হওয়াকে ‘পরিষেবার ঘাটতি’ বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘চা শ্রমিকরা যাতে নগদে মজুরি পেতে পারে, তা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিশ্চিত করা উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। আমার মতে এটি পরিষেবার ঘাটতি।’’
নোট বাতিলের পরে ব্যাঙ্কে লেনদেনে বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। তার জেরে চা শ্রমিকদের দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত মজুরি মালিকপক্ষ তুলতে পারছেন না বলে দাবি। ডুয়ার্স-তরাই-পাহাড় মিলিয়ে এখনও শতাধিক চা বাগানে মজুরি হয়নি। মজুরির দাবিতে কোথাও শ্রমিকরা অবরোধ করেছেন, কোথাও ব্যাঙ্কের সামনে অবস্থান করেছেন। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপেও সমস্যা মেটেনি। সম্প্রতি চা পর্ষদ থেকে নির্দেশিকা জারি করে সব শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশ দিয়েছে। অ্যাকাউন্ট খোলাতে শিবিরও চলছে। ব্যাঙ্কে টাকা জমা পড়লেও, শ্রমিকদের হাতে নগদ কী করে আসবে সে প্রশ্নও রয়েছে। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তার কোনও উত্তর নেই কোনও পক্ষের কাছে। এ দিনের লোক আদালতের অনুষ্ঠানে এই আপদকালীন পরিস্থিতির একটি সমাধানও দিয়েছেন জয়মাল্যবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘পরিস্থিতির কথা ভেবে সাময়িক সময়ের জন্য ক্রেডিট নোট চালু করা যেত। যা দিয়ে কিছুদিনের জন্য চা শ্রমিকরা লেনদেন চালাতে পারতেন।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তথা রাজ্য আইনি পরিষেবা সমিতির নির্বাহী চেয়ারম্যান অনিরূদ্ধ বসু, কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সৌমিত্র পাল সহ অনান্যরা।