সান্ত্বনা: মৃত শ্যামল রায়ের মেয়ের শুশ্রূষায় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মঙ্গলবার ধূপগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
এনআরসি আতঙ্কিত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধে পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলার তিন প্রান্তে ছুটে বেড়ালেন অরূপ বিশ্বাস সহ তৃণমূল নেতারা।
ময়নাগুড়ি থেকে ধূপগুড়ি, সেখান থেকে ফের জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া বাহাদুরের গ্রাম। সর্বত্র এনআরসি নিয়ে বিজেপিকে বিঁধলেন নেতারা। গ্রামের বাসিন্দাদের জানালেন তৃণমূল পাশে রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার থাকতে রাজ্যে এনআরসি হবে না বলেও জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতারা। বিজেপি শিবির থেকে অবশ্য পাল্টা বিবৃতি ছাড়া তেমন কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
মঙ্গলবার রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ময়নাগুড়িতে মৃত অন্নদা রায়ের বাড়ি যান। তাঁর পরিজনের দাবি, এনআরসি আতঙ্কেই অন্নদা আত্মঘাতী হন। এ দিন অন্নদার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল। ওই বাড়িতে গিয়ে অন্নদার পরিজনকে সান্ত্বনা দেন মন্ত্রী। পরে ময়নাগুড়িতে একটি সভাও করেন অরূপ। সভায় রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব সহ জেলা তৃণমূল নেতারা ছিলেন।
অন্নদার বাড়িতে অরূপ পৌঁছনোর মধ্যেই খবর আসে ধূপগুড়িতে এক ভ্যানচালক শ্যামল রায়ের (৪২) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ময়ন্তীর দাবি, ভোটার কার্ড হারিয়ে ফেলেছিলেন শ্যামল। ছোট দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ক্যাম্পে গিয়ে থাকতে হবে বলে মাঝেমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করতেন বলে পরিজনের দাবি। এ দিন তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশে করা অভিযোগ স্ত্রী লিখেছেন এনআরসি আতঙ্কে ভুগেই স্বামী আত্মঘাতী হয়েছেন। খবর পেয়েই অরূপ সিদ্ধান্ত নেন ধূপগুড়ি যাবেন। খন্দে ভরা জাতীয় সড়কে প্রায় ৩০ কিমি পেরিয়ে ওই বাড়িতে পৌঁছন মন্ত্রী-সহ তৃণমূল নেতারা।
সেখানে থাকতে থাকতেই ফের খবর আসে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া বাহাদুর পঞ্চায়েত এলাকায় শারীরিক প্রতিবন্ধী সাবের আলি নামে ৩২ বছরের এক যুবক কুঁয়োয় ঝাঁপ দিয়েছেন। তাঁর নিজের এবং ছোট দুই মেয়ের আধার কার্ডে নাম ভুল রয়েছে। সেই আতঙ্কে গোটা পরিবার ভুগছিল বলে দাবি। অরূপ সিদ্ধান্ত নেন তিনি সেখানেও যাবেন। অরূপের কনভয় যখন বাহাদুরে পৌঁছয় ততক্ষণে সন্ধ্যে নেমেছে। অনেক লোক জড়ো হয় সাবেরের বাড়িতে। অরূপ সকলকে বলেন, “তৃণমূল যতদিন থাকবে বিজেপিকে এনআরসি চালু করতে পারবে না। কাউকে নিজের বাড়ি, দেশ ছাড়তে হবে না।’’ তা শুনে শোকের মধ্যেই কেউ কেউ হাততালি দিয়ে ওঠেন। বিজেপি এনআরসি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন অরূপ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য অরূপকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘এ সব নাটক করে িকছু হবে না। মানুষ ওঁদের বিসর্জন দিয়ে ফেলেছেন।’’