বাস্তব: প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধ হলে এই ছবি বেশি দেখা যাবে না বলেই আশঙ্কা প্রশাসনের। ফাইল চিত্র।
টাকা নেই। তাই চলতি আর্থিক বছরে নতুন করে একশো দিনের কাজের পরিকল্পনা করল না জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন।
কাজ না হওয়ার এই আশঙ্কায় জেলা জুড়ে বন্যা মোকাবিলা নিয়ে উদ্বেগে প্রশাসন। উদ্বেগ তৈরি হয়েছে গরমে জলকষ্ট নিয়েও। চৈত্র মাসের শুরু থেকেই একশো দিনের প্রকল্পে পানীয় জলের উৎস তৈরি করা থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হয়ে থাকে। গত বছরেও একশো দিনের কাজের মজুরি বকেয়া ছিল। তবু এপ্রিল-মে মাস পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ হয়েছে। তার পর থেকে কাজ পুরোপুরি বন্ধ। এ বছরে প্রকল্পের কোনও কাজই হয়নি। তার ফলে, এ বারে বন্যা নিয়ন্ত্রণএবং জল সঙ্কটের মোকাবিলা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
গত আর্থিক বছরে জলপাইগুড়ি জেলায় একশো দিনের প্রকল্পে শ্রম বাজেট ছিল অন্তত ২৮০ কোটি টাকা। যার একটি টাকাও পায়নি জেলা প্রশাসন। সে কারণে এ বারের শ্রম বাজেট তৈরি হয়নি। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, যদি বকেয়া বরাদ্দ মিলে যায়, তা হলে গত বছরের বাজেট ধরেই কাজ শুরু হবে। যদিও প্রশাসনেরচিন্তা বন্যা এবং পানীয় জলের সঙ্কট নিয়ে।
জলপাইগুড়ি জেলায় তিস্তা, জলঢাকা থেকে লিস-ঘিসের মতো বন্যাপ্রবণ নদীর বাঁধ সংস্কারের কাজ সেচ দফতরই করে। তবে ছোট ছোট বহু নদীর পাড় বাঁধাই থেকে মাটির বাঁধ তৈরির কাজ হয় একশো দিনের প্রকল্পে। যেমন করলা, ধরধরা, পাঙ্গা, ধরলা, যমুনার মতো নদীতে প্রতি বছর একশো দিনের কাজেই পাড় বাঁধাই বা বাঁধ তৈরির কাজ হয়। প্রকল্প না থাকায় এ বছর সেই কাজ হবে না। তেমনিই জেলার পাহাড়ি বা উঁচু এলাকায় ঝোরা থেকে পানীয় জল আনার জন্য সংস্কারের কাজও একশো দিনের কাজে করা হয়। সুখা মাটিতে কুয়ো খোঁড়ার কাজও হয়। প্রকল্পে বরাদ্দ না থাকায় সেই কাজও হবে না। তার ফলে, গরমে জলসঙ্কট মোকাবিলা নিয়েও চিন্তায় প্রশাসন। একশো দিনের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুচেতনা দাস বলেন, “প্রকল্পে বরাদ্দ না থাকায় এ বছর নতুন বাজেটও হয়নি, প্রস্তাবিত কাজের তালিকাও হয়নি।”
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মণ প্রশ্ন তুলেছেন, “একশো দিনের কাজের টাকা না দেওয়ায় গ্রামের হাজার হাজার মানুষ কাজ পাচ্ছেন না। গ্রামের পরিকাঠামো থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ হচ্ছে না, এর দায় বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারকেই নিতে হবে। সাংসদ শুধু দিল্লিতে গিয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে ছবি তোলেন, রাজ্যের মানুষের দাবি নিয়ে কিছু বলেন না।”
পাল্টা বিজেপির সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, “সাধারণ মানুষদের যে মজুরি পাওয়ার কথা সে টাকাও তৃণমূল চুরি করেছে। সাধারণ শ্রমিকদের নাম করে একশো দিনের টাকা তুলে তৃণমূল নেতারা পকেটে ভরেছে। এখন টাকার হিসেব দিতে পারছে না। হিসেব দিলেই, কেন্দ্র টাকা দেবে।”