নার্সিংহোমের তিন চিকিৎসক সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য পুলিশের আর্জি খারিজ করে দিল জলপাইগুড়ি আদালত৷ এ দিকে, গোটা ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের ৩০৪ ধারা প্রয়োগ নিয়ে এ দিন জলপাইগুড়িতে চিকিৎসকদের দফায় দফায় বিক্ষোভে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে৷
গত ১১ এপ্রিল জলপাইগুড়ির বাবুপাড়া এলাকার একটি নার্সিংহোমে রেসকোর্স পাড়ার বাসিন্দা মীনা ছেত্রীর (৬২) মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে৷ অভিযোগ ছিল, ভেন্টিলেশন সিস্টেম খারাপ থাকা সত্ত্বেও ওই বৃদ্ধাকে সেখানে রাখা হয়েছিল৷ যার জেরে তার মৃত্যু হয়৷
ওই ঘটনায় ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট ছাড়াও অনিচ্ছাকৃত খুনের ৩০৪ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ৷ তিন চিকিৎসক সহ ছ’জন আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন৷ বুধবার একজন নার্স ছাড়া বাকি সবার জামিনের আবেদন খারিজ করে আদালত৷ এরপরই বৃহস্পতিবার ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে আদালতে আর্জি জানায় পুলিশ৷
আদালত সূত্রের খবর, এ দিন শুনানির শুরুতেই চিকিৎসক সহ পাঁচজনের আইনীজীবী সন্দীপ দত্ত ও বিদ্যুৎ ঘোষ পুলিশের এই আর্জির বিরোধিতা করেন৷ সন্দীপবাবু দাবি করেন, পুলিশ আদালতে যা জানিয়েছে, সেটা কখনই আইনগ্রাহ্য নয়৷ সরকার পক্ষের আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা জানান, অভিযুক্তরা পালিয়ে যেতে পারে৷ তাই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি প্রয়োজন৷ তবে দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত পুলিশের আর্জি খারিজ করে দেয়৷
এই ঘটনায় ৩০৪ ধারা প্রয়োগ নিয়ে এ দিন সকাল থেকেই সরব ছিলেন সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকদের একটা অংশ৷ বেলা এগারোটা নাগাদ তারা সিএমওএইচ-এর দফতরে স্মারকলিপি দিতে যান৷ অভিযোগ, সেই সময় অনেক চিকিৎসক জেলা হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আউটডোরে রোগী না দেখে আন্দোলনে যোগ দেন৷ ফলে প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে চিকিৎসা পরিষেবা৷ যদিও চিকিৎসকরা তা মানেননি৷ বিকালে ফের চিকিৎসকরা সিএমওএইচ-এর সঙ্গে দেখা করেন৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারের কাছেও স্মারকলিপি প্রদান করেন৷
চিকিৎসক স্বস্তিশোভন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে ভাবে গোটা ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের ৩০৪ ধারা দেওয়া হয়েছে, তাতে করে চিকিৎসকরা সবাই আতঙ্কে রয়েছেন৷ আমরা চাই ৩০৪ ধারা প্রত্যাহার করা হোক৷ পুলিশ সুপারকেও সেই আর্জি জানিয়েছি৷’’ সূত্রের খবর, পুলিশ কর্তা এ দিন চিকিৎসকদের অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন৷ কিন্তু চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, ‘‘কোন আশ্বাসে আমরা কাজ করব বুঝতে পারছি না৷’’