মাটির তলার ভাঁড়ারে টান, ঘোলাজল উঠছে পাম্পে

শহর জুড়ে জল তোলার জন্য পুরসভার ২৭টি পাম্প হাউস রয়েছে। তার মধ্যে অন্তত পাঁচটি পাম্প থেকে নিয়মিত ভাবে জল কম উঠছে বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০৬:২৫
Share:

এই পাম্প হাউসেই উঠছে ঘোলাজল। নিজস্ব চিত্র

বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের জন্য জলপাইগুড়ি শহরের মূল ভরসা মাটির তলার জল। পুরসভাই পাম্পের সাহায্যে মাটির তলার জল তুলে তা পাঠায়। সাত দশক ধরে জল তোলার জন্য পুরসভার অন্যতম ভরসা ছিল জলপাইগুড়ি পুরসভার চত্বরে বসানো উচ্চ ক্ষমতার পাম্প হাউস। কিন্তু এখন মাঝেমধ্যেই মাটির তলার জলের নাগাল পাচ্ছে না এই পাম্প। কমে গিয়েছে জল ওঠার পরিমাণও। একই ছবি শহরের আরও কয়েকটি পাম্প হাউসে। এই ঘটনায় জল সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন শহরের প্রযুক্তিবদদের একাংশ।

Advertisement

শহর জুড়ে জল তোলার জন্য পুরসভার ২৭টি পাম্প হাউস রয়েছে। তার মধ্যে অন্তত পাঁচটি পাম্প থেকে নিয়মিত ভাবে জল কম উঠছে বলে সূত্রের খবর। তার মধ্যে তিনটির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সেগুলোয় একেবারেই জল উঠছে না বলে পুরসভা সূত্রের খবর। প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন দীর্ঘ দিন ধরে নাগাড়ে জল তুলতে থাকায় মাটির নীচে ওই এলাকায় জলস্তর ক্রমাগত নামছে। বিপদের কথা মেনে নিচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষও। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “একই জায়গা থেকে বেশিদিন জল তোলা যায় না। সে সব কথা মাথায় রেখে আমরা বিকল্প আরও পাঁচটি জায়গা চিহ্নিত করেছি নতুন পাম্প স্টেশনের জন্য। এ বছরের বাজেটে সেই বরাদ্দ ধরা রয়েছে। আমরা প্রস্তুত আছি।”

রায়কত পাড়া, সেনপাড়া-সহ শহরের বেশ কিছু এলাকায় পুরসভার সরবরাহ করা জল কম পরিমাণে পাচ্ছেন বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। কোথাও জলের চাপ কম থাকায় দোতলায় জল উঠছে না, কোথাও আবার সুতোর মতো জল পড়ছে বলে অভিযোগ। নেতাজি পাড়া এলাকায় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গরমের সময় অতিরিক্ত জল তো দূরের কথা প্রতিদিন যেটুকু পাওয়ার কথা তাও মিলছে না।

Advertisement

সূত্রের খবর, পুরসভা চত্বরে থাকা পাম্পটি গত সত্তর বছর ধরে জল তুলছে। সেই পাম্প হাউসে জলের পরিমাণ কমছে। মাঝেমধ্যে ঘোলা জল উঠছে। যা জলস্তর নেমে যাওয়ার ইঙ্গিত বলে দাবি। রায়কত পাড়া, স্পোটর্স কমপ্লেক্স লাগোয়া আরও দুটি পাম্পে জল কম উঠছে। পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দ্রুত নতুন জায়গায় পাম্প হাউস সরানো হবে। তবে জলের অপ্রয়োজনীয় খরচ না কমালে অদূর ভবিষ্যতে ফের সঙ্কট তৈরির আশঙ্কাও করছে পুর কর্তৃপক্ষ।

এখন পুরসভা প্রতিদিন প্রায় ১৫ মিলিয়ন লিটার জল মাটির নীচ থেকে তোলে। এই বিপুল পরিমাণ জল খাওয়া এবং ঘরের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া গাড়ি, রাস্তা ধোয়ারল কাজেও ব্যবহার হয়ে থাকে। পুরসভার সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, অন্তত ৩০ শতাংশ জল বাজে খরচ হয়ে থাকে। সেটা না হলে প্রতিদিন আরও কম পরিমাণে জল তুললেও চলত বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের একাংশের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement