গ্রামের বাড়িতে বিষণ্ণ পরীমণি। ছবি: ফেসবুক।
একের পর এক প্রিয়জন বিয়োগ। প্রথম স্বামী ইসমাইল হোসেনের মৃত্যুর পর তাঁর প্রথম ছবির পরিচালক শাহ আলম মণ্ডলও প্রয়াত। স্বাভাবিক ভাবেই বিষণ্ণ পরীমণি। পরিচিত মানুষদের মৃত্যুসংবাদ ব্যথিত করেছে অভিনেত্রীকে। তার পরেও সব সামলে নানা ভাই শামসুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর যাবতীয় অনুষ্ঠান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সম্পন্ন করলেন তিনি।
দিন কয়েক ধরে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে ঢাকা শহর ছেড়েছেন নায়িকা। পিরোজপুরে তাঁর নানা ভাইয়ের গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন তিনি। সেখানে তাঁর মা-বাবা সহ প্রত্যেক প্রিয়জনের কবর। গ্রামের বাড়িতে প্রার্থনা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি গ্রামের মানুষদের ভূরিভোজ করান তিনি। ভাত, মাংস, পায়েস ছিল তালিকায়। এর আগে পরীমণি একটি ভিডিয়োর ঝলকে অনুরাগীদের জানান, তিনি পায়েস রাঁধছেন। বরাবর মাটির উনুনে কাঠের জ্বালানিতে রান্না তাঁর পছন্দের। আধুনিকতার হাত ধরে গ্রামের বাড়িতেও আর মাটির উনুন নেই। কিন্তু অভিনেত্রীর আবদারে সে রকমই আয়োজন করেন তাঁর আত্মীয়েরা।
পরমাত্মীয়ের মৃত্যুবার্ষিকী আয়োজনের পাশাপাশি প্রথম ছবির পরিচালকের মৃত্যুতেও শোকপ্রকাশ করেছেন পরীমণি। শাহ আলম মণ্ডলের ‘ভালবাসা সীমাহীন’ ছবি দিয়ে বিনোদন দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ তাঁর। সমাজমাধ্যমে পরিচালকের সঙ্গে তোলা একটি ছবি ভাগ করে নিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন, “ওস্তাদ আপনিও চলে গেলেন! আজকের দিনেই আমার নানা চলে গেল। আপনিও! মাফ করে দিয়েন ওস্তাদ। আমাদের শেষ দেখা হলই না।”
একই ভাবে প্রথম স্বামী তথা পরীমণির পিসতুতো ভাই (অভিনেত্রীর দাবি অনুযায়ী) ইসমাইল হোসেনের মৃত্যুতেও দুঃখিত তিনি। সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “নিয়তির ডাকে দিলে যে সাড়া, ফেলে গেলে শুধু নীরবতা। যার চলে যায় সেই বোঝে হায়, বিচ্ছেদের কি যন্ত্রণা!” সেই নিয়ে জল্পনা শুরু হতেই বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বলেন, “কারও মৃত্যু হাসি-তামাশার বিষয় নয়। ইসমাইলের মৃত্যু নিয়ে যে যে ভাবে পারছেন, খবর প্রকাশ করছেন। উৎসব উৎসব ভাব মনে হচ্ছে। এটা সত্যিই কষ্টদায়ক। এমনটা মোটেও আশা করিনি।”
মা-বাবার অকালমৃত্যুর পর নানা ভাইয়ের কাছে মানুষ হয়েছেন পরী। তাঁর উত্থান-পতনের এক মাত্র সঙ্গী ছিলেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর প্রয়াণে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন নায়িকা। স্বামী শরিফুল রাজের সঙ্গে বিচ্ছেদের সময়েও তাঁর বল-ভরসা ছিলেন তাঁর নানা। ক্রমে দুই সন্তানকে আঁকড়ে জীবনের ছন্দে ফেরেন পরীমণি।