—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
জেলার আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজিপি সংখ্যাগরিষ্ঠ, ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু। মোট ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ক’টিতে বোর্ড দখল করা সম্ভব, তা জানতে চেয়েছিল দলের কেন্দ্র এবং রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্রের দাবি, এই প্রশ্নের উত্তরে দলের জেলা নেতৃত্ব অনিশ্চয়তা ছাড়া আর কিছুই জানাতে পারেননি।
বিজেপি জেলা নেতৃ্ত্বের দাবি, জিতে আসা নির্দলদের সিদ্ধান্তেই বিজেপির বোর্ড গড়ার সম্ভাবনা জিইয়ে রয়েছে। সম্প্রতি পঞ্চায়েত ভোটের ফল বিশ্লেষণ করতে কয়েকটি জেলাকে নিয়ে বৈঠক করে বিজেপির রাজ্য-কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বোর্ড গঠনের জন্য অন্য কোনও দলকে বিজেপি সমর্থন করবে না। অন্য কোনও দলের সমর্থনও বিজেপি চাইবে না। কোনও দলের নির্বাচিত সদস্য যদি বিজেপিকে সমর্থন করতে চান, সে ক্ষেত্রে দল সেই সমর্থন নিয়ে বোর্ড গঠন করতে পারে বলে জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ি জেলার ৮০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠ ৬৬টিতে। বাকি ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশির ভাগেই জয়ী নির্দল প্রার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়তে গেলে বিজেপিকে নির্দলদের সমর্থন পেতে হবে। অন্য দিকে, তৃণমূলের দাবি, নির্দলেরা ভোট কেটে নেওয়াতেই বিরোধীরা জয় পেয়েছে। এ দিকে, একুশে জুলাইয়ের সভা সেরে তৃণমূল নেতৃত্ব জেলায় ফেরার পরে দলের তরফে খবর, নির্দলদের ক্ষেত্রে সার্বিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে বারণ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিস্থিতি আলাদা করে বিচার করতে বলা হয়েছে দলকে।
তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘বিজেপিকে আটকাতে নির্দলদের সমর্থন নেওয়া যেতে পারে, এমন বার্তাই দলের তরফে দেওয়া হয়েছে।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, ‘‘দলের নীতি পরিষ্কার। সেই মতোই পদক্ষেপ করা হবে। মানুষ তৃণমূলকে চেয়েই ভোট দিয়েছেন।’’
ত্রিশঙ্কু গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী সদস্যদের বিজেপি ইতিমধ্যে অসমে পাঠিয়েছে। তাতেও শেষ রক্ষা হবে বলে মনে করছেন না দলের নেতৃত্ব। কারণ বাম-কংগ্রেস। যে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি ত্রিশঙ্কু এবং নির্দল নেই, যেমন, খড়িয়া, সেখানে সিপিএম এবং কংগ্রেস জয়ী। বাম-কংগ্রেসের দলীয় সিদ্ধান্ত, বিজেপির সঙ্গে জোট করে কোথাও বোর্ড গঠন করা হবে না। সে ক্ষেত্রে ত্রিশঙ্কু পঞ্চায়েত তৃণমূলের দিকেই যেতে চলেছে বলে বিজেপি জেলা নেতারা রাজ্যকে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। শেষে ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতেও বিজেপিকে থালি হাতেই থাকতে হবে বলে দলের অন্দরেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘কতগুলি গ্রাম পঞ্চায়েতে আমাদের বোর্ড গঠন হতে পারে, সে বিষয়ে রাজ্য স্তর থেকে জানতে চেয়েছিল। দলের তরফেযে রিপোর্ট গিয়েছে, তাতে এক কথায় বলা যায়, হাতে পেনসিল ছাড়া আর কিছু থাকবে না।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘বাম-কংগ্রেসকে সমর্থন করা মানে তৃণমূলকেই সমর্থন করা। আমরা কারও কাছে সমর্থন চাইব না। বিজেপি একাই বোর্ড গঠনের চেষ্টা করবে। মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপিকেই ভোট দিয়েছিলেন। মানুষের রায়কে আমরা সম্মান জানাব।’’