ইশা খান চৌধুরী। ফাইল চিত্র
সরকারি উদ্যোগে প্রথম বইমেলার প্রথম দিনে বইপ্রেমীদের ভিড় উপচে পড়ল কালিয়াচকে। বইমেলা উপলক্ষ্যে পদযাত্রা থেকে শুরু করে, উদ্বোধনে মানুষের ঢল নামল। তা দেখে অভিভূত বইমেলার উদ্বোধক তথা গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী।
তিনি বললেন, ‘‘মানুষের ভিড়ই বলে দিচ্ছে কালিয়াচকের প্রথম বইমেলা ঘিরে উন্মাদনা ও আবেগের কথা। বইমেলাকে এ বার গ্রামমুখী করতে হবে। সে উদ্যোগ আমরা শুরু করেছি।’’
মন্ত্রী বইমেলা নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলেও উদ্বোধনের আমন্ত্রণপত্র ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অভিযোগ, বইমেলার উদ্বোধনের আমন্ত্রণপত্রে স্থানীয় সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরীর নাম নেই। তাতে ক্ষুব্ধ তিনি। ইশার অভিযোগ, ‘‘‘আমার বিধানসভা এলাকায় সরকারি উদ্যোগে প্রথম বইমেলা হচ্ছে। তাকে স্বাগত জানাই। সেখানে তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী থেকে শুরু করে নেতা-নেত্রীদের নাম থাকলেও স্থানীয় বিধায়ক হিসেবে আমার নাম রাখা হয়নি। এটা বইমেলা না তৃণমূলের মেলা?’’
ইশার অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি বইমেলা কমিটিTর সম্পাদক তথা জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক প্রবোধ মাহাত।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এ বছর মালদহ জেলা বইমেলা প্রথমে কালিয়াচকে করার কথা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা মালদহের জেলা সদর ইংরেজবাজারের মালদহ কলেজ মাঠে করা হয়। কালিয়াচকে জেলা বইমেলা হতে পারে সেই খবরে আশায় বুক বেঁধে ছিলেন স্থানীয় বইপ্রেমীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা না হওয়ায় গ্রন্থাগার দফতরে কালিয়াচকে বইমেলা করার আবেদন জানান তাঁরা। শেষ পর্যন্ত গ্রন্থাগার দফতর কালিয়াচক ১, ২ ও ৩ ব্লককে নিয়ে কালিয়াচক হাই স্কুল মাঠে প্রথম সরকারি উদ্যোগে বইমেলা করার বিষয়ে সম্মতি জানায়।
‘ভালবাসার মেলবন্ধনে গড়ে উঠুক নতুন বিশ্ব’— এই থিমে এ দিন বেলা ২টো নাগাদ কালিয়াচকের কারবালা মাঠ থেকে বইমেলা নিয়ে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা শুরু হয়। সেই পদযাত্রা বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে কালিয়াচক হাইস্কুল মাঠের বইমেলা প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। সেখানে বেলুন উড়িয়ে সরকারি উদ্যোগে প্রথম বইমেলার উদ্বোধন করেন গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। ছিলেন দুই প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি ও জাকির হোসেন, কবি সুবোধ সরকার।
বইমেলার উদ্বোধনের পরে সিদ্দিকুল্লা বলেন, ‘‘আমরা বইমেলাকে গ্রামমুখী করতে চাই। সেই উদ্যোগ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে সাগরে বইমেলা হয়েছে, বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকাতেও বইমেলা হয়েছে। এ বার মালদহের কালিয়াচকে।’’
বইমেলা কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বইমলা চলবে। বই মিলবে প্রায় ৫০টি স্টলে। এ ছাড়া আরও ৩০ টি স্টল করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন সরকারি দফতরের পাশাপাশি খাবারও মিলবে। বইমেলা উপলক্ষ্যে প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।