জলের তোড়ে পার ভাঙছে তিস্তা নদীর জলপাইগুড়িতে। ছবি - সন্দীপ পাল।
সীমান্ত পেরিয়ে তিস্তায় বাঁধ তৈরি হয়েছে। তার জেরে ঘনীভূত হয়েছে এ পারে বন্যার আশঙ্কা। তলিয়ে যেতে পারে এ দেশের ভূখণ্ডের অনেকটাই, বিপন্ন বিএসএফের
একটি চৌকিও। সব দিক খতিয়ে দেখে বাঁধ নিয়ে আপত্তি তুলেছে সেচ দফতর। পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্টও পাঠিয়েছে সেচ দফতর।
কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের তিনবিঘা লাগোয়া কুচলিবাড়ি পার করে তিস্তায় বাঁধ তৈরি হয়েছে সীমান্তের অন্য পারে। এ পারে কুচলিবাড়িতেও বাঁধ রয়েছে। সীমান্তের ও পারের বাঁধকে টেনে এনে এ পারের বাঁধের সঙ্গে সংযুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সে প্রস্তাব নাকচ করেছে সেচ দফতর। ও পারে যে বাঁধ রয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। কারণ, সীমান্তের ও পারে বাঁধে ধাক্কা খেয়ে জল উল্টোপথে ফিরে আসতে পারে। তা ছাড়া, বাঁধের এক পাশে বৃষ্টির জল জমে বড়সর ভাঙন ধরাতে পারে, এমন আশঙ্কাও রয়েছে।
সেচ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার (উত্তর-পূর্ব) কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, “আমরা পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি আন্তর্জাতিক। আমরা আমাদের আপত্তির কথা রিপোর্টে জানিয়েছি। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।”
তিনবিঘার লাগোয়া বিএসএফের চৌকির নাম হেমন্ত। সেটি সীমান্তের ওপারে বাঁধ তৈরির ফলে, ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৫ সাল থেকে সীমান্তের ওপারে বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। প্রথম জানতে পারার পরে আপত্তি তোলা হয়। যদিও বাঁধের কাজ ঢিমেতালে এগোতে থাকে। সম্প্রতি সে বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে। এবং এ বারের বৃষ্টিতে শুরু হয়েছে নতুন বাঁধের কারণে দুর্ভোগ। বর্ষায় প্রবল জল নিয়ে তিস্তা সিকিমের পাহাড় থেকে নেমে এসে সমতল পেরিয়ে মেখলিগঞ্জের পরে আংশিক বাধা পাচ্ছে। তার ফলে, স্বাভাবিক গতিতে জল যেতে
পারছে না।
সেচ দফতরের দাবি, সীমান্তের ওপারে দু’টি গ্রামকে রক্ষা করতে বাঁধ তৈরি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তার আগে, দু’পারের বাস্তুকারদের আলোচনায় বসে পরিকল্পনা করাই অভিপ্রেত ছিল বলে দাবি। সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সব দেখেও আমাদের কিছু করার নেই। উপযুক্ত মাধ্যমে বিদেশ মন্ত্রকে ফাইল গিয়েছে।”
সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে এসে বিএসএফের শীর্ষ আধিকারিকেরা সেচ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিএসএফের এক আধিকারিকের
দাবি, “নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িয়ে রয়েছে। আমাদের শীর্ষ স্তরে জানানো হয়েছে, সেখান থেকে বিবেচনার কথাও বলা হয়েছে।”