নবরূপে: সেজে উঠেছে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। নিজস্ব চিত্র
বৃহস্পতিবার ভোর ৪টে ২০ মিনিট। মালদহ টাউন স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে মালদহ-হাওড়া ভায়া রামপুরহাট ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস। ব্যাগ হাতে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটছেন ইংরেজবাজার শহরের বাসিন্দা প্রবীর সরকার। ট্রেনটি ৪টে ৩০ মিনিট নাগাদ ছাড়তেই মাঝের একটি কামরায় পড়িমরি করে উঠে পড়লেন তিনি। কামরায় উঠেই সহযাত্রীদের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রশ্ন, এটা কি জেনারেল কামরা? সহযাত্রীদের মুখে ‘হ্যাঁ’ উত্তর শুনে হাঁফ ছেড়ে একটি আসনে বসে পড়লেন তিনি। তাঁর কথায়, “ভোলবদলে গিয়েছে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের। ঝাঁ চকচকে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরাও দেখে মনে হচ্ছে যেন বাতানুকূল।”
মালদহ-হাওড়া ভায়া রামপুরহাট ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের ভোল বদলে যাওয়ায় ওই ট্রেনে উঠতে গিয়ে থমকে দাঁড়াচ্ছেন অনেকেই। তাঁদের দাবি, মাস চারেক আগেও ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের অধিকাংশ জানলা ছিল ভাঙাচোরা। বসার আসনগুলিও ছিল বেহাল। শৌচাগারের কল থাকত ভাঙাচোরা। বৈদ্যুতিক পাখাগুলির একাংশ অকেজো হয়ে থাকত বলে দাবি করেন নিত্যযাত্রী রাজেশ সিংহ। তিনি বলেন, “কলকাতা যাওয়ার জন্য ভোরের ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ট্রেনটি হাওড়া পৌঁছয় বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। তবে ট্রেনের হাল খুব খারাপ ছিল। পরিকাঠামো পাশাপাশি অপরিচ্ছন্ন থাকত ট্রেনটি।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনটিতে ১৮টি কামরা রয়েছে। তার মধ্যে দু’টি বাতানুকূল, তিনটি সংরক্ষিত এবং ১১টি কামরাই অসংরক্ষিত। মাস তিনেক আগে ট্রেনটির ভোল বদলানোর উদ্যোগী হয় রেল। এই ট্রেনটি হাওড়া ডিভিশনের অধীনে। প্রায় এক দশক আগে এই ট্রেনটি চালু করে রেল। কামরায় ব্যাগপত্র রাখার শেডটি লোহার পরিবর্তে ফাইবার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বদল করা হয়েছে জানলা, বসার আসনগুলিও। প্রতিটি আসনের সঙ্গে টেবিল, পানীয় জলের বোতল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আধুনিক মানের শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। এমনকি, পরিচ্ছন্নতাতেও জোর দেওয়া হয়েছে।
মালদহের মৎস্য দফতরের সহ অধিকর্তা নিলোৎপল বিশ্বাস বলেন, “আচমকা কাজের জন্য কলকাতা যেতে হওয়ায় ভোরের এই ট্রেনের সাধারণ কামরার টিকিট কেটে উঠে যাই। প্রথমে সাধারণ কামরায় উঠে আমিও থমকে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল যেন বাতানুকূল কামরায় উঠে পড়েছি। শতাব্দী এক্সপ্রেসের মতো রূপ দেওয়া হয়েছে ট্রেনটিকে।” মালদহের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, “ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেনের সময়টা খুব ভাল। এখন আবার ঝাঁ চকচকে হয়েছে। তবে অনেক সময় ট্রেনটি হাওড়া পৌঁছতে দেরি করে দেয়।” মালদহ টাউন স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার দিলীপ চহ্বান বলেন, “হাওড়া ডিভিশনের তরফে যাত্রী স্বাচ্ছন্দের জন্য নবরূপে সাজানো হয়েছে ট্রেনটিকে।”