মোহন বসু। —ফাইল চিত্র
পুরবোর্ডের মেয়াদের শেষ কাজের দিনে অনুমোদন পাওয়া সব ক’টি ভবনের নকশা ফের খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সোমবার জলপাইগুড়ির পুরসভার বর্তমান প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন পাপিয়া পালকে পুরমন্ত্রী ফোন করেছিলেন বলে খবর। বিকেলে চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, যে অনুমোদনগুলি নিয়ে বিতর্ক, সেগুলি খতিয়ে দেখতে তিনি পুর দফতরের মৌখিক নির্দেশ পেয়েছেন।
এই সূত্রেই সোমবার তৃণমূলের বিদায়ী সদস্যদের মধ্যে অভূতপূর্ব চাপানউতোর দেখা গেল। সকালে পুরবোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহন বসু জানান, এই নকশা পাশের দায় তাঁর একার নয়। মোহন বলেন, “১৬ মে আমি অফিসে যাইনি। আধিকারিকরা বা অন্যরা এসে কাগজপত্রে সই করিয়ে নিয়ে যেত। ভবন অনুমোদনের আগে একটা সমীক্ষা হয়। কাগজপত্র যাচাই করা হয়। তার পরে জমি, নকশা সব খতিয়ে দেখা হয়। সেই দায়িত্ব কোনও পুরসভার কোনও পুরপ্রধানের নয়। সব কাগজ ঠিক হওয়ার রিপোর্ট পাওয়ার পরেই চেয়ারম্যান সই করেন।”
এর পরে পাপিয়া পালের কাছে নকশা খতিয়ে দেখার জন্য উপরমহল থেকে নির্দেশ আসে। এর মধ্যে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর দুই সদস্য ও অন্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জেলা তৃণমূল অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “গত ১৬ মে পুরসভা থেকে যে নকশাগুলি অনুমোদন পেয়েছে, তার সব ক’টিতে মোহনবাবুর সই রয়েছে। এগুলি অনুমোদনে কোনও নিয়ম মানা হয়নি।’’ সৈকত আরও বলেন, “অনুমোদন দেওয়ার আগে পরিদর্শন করতে হয়, বাস্তুকারেরা রিপোর্ট দেন, সব নথিপত্র খতিয়ে দেখতে হয়। তার পরে কাউন্সিলরদের বোর্ডে এবং চেয়ারম্যান পরিষদের বৈঠকে পাশ করতে হয়। ১৬ মে-র অনুমোদনগুলিতে তার কিছুই হয়নি।” পুরসভার দাবি, তৎকাল পদ্ধতিতে গত ১৬ মে-র নকশাগুলি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সৈকত বলেন, “তৎকাল পদ্ধতির কোনও বৈধতা আইনে নেই। মোহন বসু কংগ্রেসের চেয়ারম্যান থাকার সময় এই নিয়ম চালু করেছেন।” এত দিন মুখ খোলেননি কেন? সৈকত বলেন, “চেয়ারম্যানের ‘সুপার পাওয়ার’ থাকে। এখন একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে খবর দেখে দল এবং আমরা পদক্ষেপ করেছি।” তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীকে চোরের তকমা দিয়েছেন মোহন বসু। মোহনবাবু, আপনি এ কথা প্রমাণ করতে না পারলে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য তৈরি হন।’’
মোহন এর জবাবে কিছু বলেননি। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার তিনি জবাব দিতে পারেন।