প্রায় শেষের দিকে তিস্তার দ্বিতীয় সেতুর কাজ। জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
দ্বিতীয় তিস্তা সেতু দ্রুত ‘ক্লিয়ার’ করে দিতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ পাঠাল দিল্লি। সম্প্রতি নির্দেশ এসেছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দ্বিতীয় সেতু ‘ক্লিয়ার’ অর্থাৎ যাতায়াতের জন্য খুলে দিয়ে পুরনো তিস্তা সেতু সংস্কার করতে হবে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, দ্বিতীয় সেতুর সামান্য কাজ বাকি রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কাজ করলে তা শেষ করতে সপ্তাহদুয়েক লাগবে। কিন্তু বাধ সেধেছে প্রবল বৃষ্টি।
সড়ক কর্তৃপক্ষের একাংশ জানাচ্ছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ২৭ নম্বর জাতীয় সড়ক কেন্দ্রীয় সরকারের কাথে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যদিও এই জাতীয় সড়কের যা হাল তাতে পুরো রাস্তা সম্প্রসারণ আগামী বছরের আগে সম্ভব নয় বলে দাবি। এই পরিস্থিতিতে সড়কের উপর থাকা দুর্বল সেতুগুলির সংস্কার চাইছে দিল্লি।
১৯৬১ সালে তৈরি হয়েছিল পুরনো তিস্তা সেতু। তারপরের বছর চিনের সঙ্গে যুদ্ধের সময় এই সেতু উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের ‘জীবনরেখা’ হয়ে উঠেছিল সেনাবাহিনীর কাছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক বাস্তুকারের কথায়, “তিস্তার পুরনো সেতুর বহন ক্ষমতা কমেছিল। সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কোনও কারণে এই সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল সম্ভব না হলে উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগে বিপর্যস্ত হবে।” তেমন হলে একমাত্র বিকল্প থাকবে ঘুরপথে পাহাড়ি এলাকা দিয়ে সেবকের পথে যাতায়াত করা। তাতে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সে কারণেই দ্বিতীয় তিস্তা সেতু দ্রুত শুরু করতে চাইছে সড়ক কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের দাবি, শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি হয়ে অসমের শিলচর পর্যন্ত যাওয়ার পথে জলঢাকা এবং তিস্তা নদীর দু’টি বড় সেতু রয়েছে। জলঢাকায় নতুন সেতু তৈরি হয়েছে। সেই সেতু দিয়ে যাতায়াতও চলছে। বাকি ছিল দ্বিতীয় তিস্তা সেতু। এ বার সেটা নিয়ে চাপ দিতে শুরু করেছে দিল্লি।
গত কয়েকদিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। তিস্তার জলও ফুলেফেঁপে উঠেছে। নদী পরিস্থিতির জন্য রেল সেতু তৈরির কাজ থমকে গিয়েছে। এখন সড়ক সেতুর কাজও আটকেছে। যদিও সড়ক কর্তৃপক্ষের দাবি, নদীবক্ষে তেমন বড় মাপের কোনও কাজ বাকি নেই। ফলে জল বাড়লেও সমস্যা হবে না। ভোগান্তি বাড়িয়েছে নাগাড়ে বৃষ্টি। পুরনো সেতুর মতো দ্বিতীয় সেতুটিও লম্বায় এক কিলোমিটারের কিছু বেশি। সেতুতে পাটাতন বসিয়ে রং করার কাজ প্রায় শেষ। শুধু দু’দিকের ‘অ্যাপ্রোচ রোডে’ পিচের প্রলেপ বাকি রয়েছে। সেতুতে যান চলাচল শুরু করার আগে শক্তি পরীক্ষাও করতে হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলেই সেতুতে যাতায়াতের অনুমতি মিলবে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প ম্যানেজার প্রদ্যুত দাশগুপ্ত বলেন, “মাত্র দু’সপ্তাহের কাজ বাকি। তারপরেই সেতু খুলে দেওয়া যেতে পারে।’’