ধূপগুড়িতে জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত ও গন্ডগোল থামাতে পুলিশে ধর পাকোড়া। ছবি দীপঙ্কর ঘটক।
রবিবারেও নতুন করে বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছড়াল ধূপগুড়িতে। গত শনিবার খোলাইগ্রাম এলাকায় একাধিক ধর্মীয় স্থানে গোলমালের অভিযোগের প্রতিবাদে এ দিন ধূপগুড়িতে ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দিয়েছিল হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। যদিও এ দিন সকাল থেকে বন্ধের কোনও প্রভাব পড়েনি সাধারণ জনজীবনে। দোকানপাট, বাজার অনেকাংশেই খোলা ছিল, রাস্তায় দেখা মিলেছে যানবাহনেরও। তবে দুপুর থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। গত শনিবার বিক্ষোভ চলার সময়ে ধূপগুড়ির অন্য একটি ধর্মীয় স্থানে গোলমাল পাকানোর অভিযোগ ওঠে। তার প্রতিবাদে এ দিন ধূপগুড়ি থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। এ দিন ওই বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, তাঁদের ধর্মীয় স্থানে গোলমালে জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে। এ দিন প্রথমে দেওমালি এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখানো চলে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর কিছু পরে ধূপগুড়ি স্টেশন মোড়ে ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ের উপর বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কিছু লোক। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ধূপগুড়ি থেকে শিলিগুড়িগামী সড়ক। অবরোধ তুলতে বিশাল পুলিশ বাহিনী ওই এলাকায় আসে। তবে অবরোধকারীরা পুলিশের অনুরোধ সত্ত্বেও অবরোধ তুলতে রাজি হয়নি। পরে উত্তরবঙ্গের আইজি রাজেশ যাদব,
জলপাইগুড়ি রেঞ্জের ডিআইজি সন্তোষ নিম্বালকর, জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার উমেশ খণ্ডবহালের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীদের একাংশের লাঠির আঘাতে মাথা ফাটে ধূপগুড়ি থানার আইসি অনিন্দ্য ভট্টাচার্যের। এর পরে অবরোধ তুলতে লাঠি চালায় পুলিশ। সেই সঙ্গে কাঁদানে গ্যাসের বেশ কয়েকটি শেল ফাটানো হয়। উন্মুক্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি
উঁচিয়ে তাড়া করে র্যাফ। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় এশিয়ান হাইওয়েতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ দিকে সূত্রের খবর, শনিবার একটি জায়গায় গোলমালের জেরে এ দিন পুলিশ স্থানীয় বিজেপির মহিলা মোর্চা নেত্রী মিতালী রায় ও তাঁর ভাই মৃণাল রায়কে পুলিশ তাঁদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে পুলিশ কিছু জানায়নি। তাঁদের আটক বা গ্রেফতার করা হয়েছে কিনা, তাও জানা যায়নি।
অভিযোগ, এ দিন অবরোধ চলাকালীন একদল লোক গিয়ে হামলা করে মিতালী রায়ের পেট্রোল পাম্পে। পাম্পে মিতালীর গাড়ি-সহ নানা সরঞ্জামও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা বিজেপি নেত্রীর ভাইয়ের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ মিছিলে হামলার অভিযোগ ওঠে। সন্ধে নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিন কোম্পানির
কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
এ দিকে, গত শনিবারের ঘটনায় ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১১ জনের পুলিশ হেফাজত এবং বাকি ১০ জনের পাঁচ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ দিন আরও ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়
বলে খবর। ধূপগুড়িতে এ দিনও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল।