ফাইল চিত্র।
দ্বন্দ্ব মেটাতেই বৈঠকের ডাক। তাই শুরুতে কোনও ভূমিকা না করে কাজ করতে কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে, কোথায় কী ত্রুটিবিচ্যুতি হচ্ছে, সেটাই জেলার নেতাদের খোলসা করে বলতে বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। কিন্তু কলকাতার মতো ফের যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে তা তাঁরা বুঝতে পারেননি। সমস্যা বা ত্রুটির কথা বলতে গিয়ে কোচবিহারের নেতারা একে অপরের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন। যা দেখে বিস্মিত অভিষেক ও পিকে দু’জনেই। এঁদের একজন তো নাকি বলেই ফেলেন, ‘‘এখানেই যদি আপনারা এমন করেন, তো জেলায় কী করেন?” ওই বিস্মিত প্রশ্নের পর একে একে চুপ হয়ে যান জেলার নেতারা।
সোমবার সবাইকে মিটিংয়ের নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। সময়ের আগে-পরে জেলার সব নেতারাই হাজির হন হোটেলের কনফারেন্স হলে। একদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর। অন্যদিকে, কোচবিহারের নেতা-বিধায়কেরা। অসুস্থতার কারণে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ হাজির হননি। মিটিংয়ে যাননি বিদ্রোহী বিধায়ক মিহির গোস্বামীও। জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় মহামিছিল ডেকেছিলেন কোচবিহারে। তা শেষ করে শিলিগুড়ি পৌঁছতে খানিকটা সময় লেগে যায়।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে হারের মুখ দেখতে হয়েছে কোচবিহারে। সেই জায়গা থেকে দলকে কী করে তুলে আনা যায় তা নিয়েই ব্লু-প্রিন্ট তৈরিতে নেমেছেন পিকে। বিধানসভা ধরে ধরে টিম পিকে’র সদস্যেরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একের পর এক রিপোর্ট যাচ্ছে তৃণমূলের সদর দফতরে। সেই রিপোর্টেই দলের খোলনলচে বদলে ফেলতে শুরু করেন রাজ্য নেতৃত্ব। জেলা থেকে ব্লকে নতুন মুখদের তুলে আনা হয়েছে। তরুণ কর্মীদের দেওয়া হয়েছে প্রাধান্য। তার পরেও বহুধাবিভক্ত দল এক জায়গায় হতে পারেনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন সমীকরণে দলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম এবং বিধায়ক উদয়ন গুহ একপক্ষে। অপরপক্ষে, দলের প্রাক্তন সভাপতি মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, মিহির গোস্বামী, হিতেন বর্মণ, অর্ঘ্যরায় প্রধানরা। জেলা ও ব্লক কমিটি নিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়ে মিহির দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এমন এক অবস্থায় দলকে ঐক্যবদ্ধ করার বার্তা নিয়েই শিলিগুড়ি এসে বৈঠক ডাকেন অভিষেক ও পিকে। কিন্তু দু’পক্ষ বলার সুযোগ পেতেই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। সব কিছু শোনার পর দলের জেলা চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণকে জেলা সভাপতির উপস্থিতিতে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকের নির্দেশ দেন অভিষেক ও প্রশান্ত। বৈঠকের সময় ও তারিখও সেখানে ঠিক করে দেওয়া হয়।