ছবি: সংগৃহীত
কে থাকবেন, আর কে থাকবেন না? তা নিয়েই চলছে আলোচনা। বাড়ি থেকে পার্টি অফিসেও একই গুঞ্জন। জেলা সভাপতি পদেও কি পরিবর্তন হতে পারে, তা নিয়ে দলের অন্দরে কানাঘুষো চলছে।
পদ্ম শিবির সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন ঘিরে কোচবিহারে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হওয়ার আশঙ্কা হয়েছে। যদিও দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, এ রকম হওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, স্বাভাবিক কারণেই দ্বন্দ্বের সুযোগ থাকবে না। দলের কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “দলের সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে। এটা দলের নিয়ম মেনেই হচ্ছে। তাই কোনও দ্বন্দ্ব হওয়ার আশঙ্কা নেই।” তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলেরই এক নেতা বলেন, “কিছু ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। তা আলোচনার মাধ্যমেই মিটিয়ে নেওয়া হবে।”
দলীয় সূত্রের খবর, বিজেপির সাংগঠনিক কোচবিহার জেলায় ৩৮টি মণ্ডল রয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই মণ্ডলগুলি থেকে একাধিক নাম প্রস্তাব আকারে নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ১৬ নভেম্বর কলকাতায় রাজ্য কমিটির বৈঠকে মণ্ডল সভাপতিদের নাম ঘোষণা করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এই অবস্থায় একাধিক মণ্ডলে দু’টি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। দল সূত্রেই খবর, নিজেদের মধ্যে বিরোধেও জড়িয়ে পড়ছেন তারা। কিছু দিন আগে বুড়িরহাটের একদল বিজেপি সমর্থক জেলা পার্টি অফিসে গিয়ে বিক্ষোভে শামিল হন। মণ্ডল সভাপতি পদে প্রস্তাবিত কিছু নাম নিয়ে আপত্তি করেন তাঁরা। দল মনে করছে, এমন পরিস্থিতিতে সমস্ত মণ্ডল থেকেই এমন কাউকে দায়িত্ব দিতে চাইছেন, যাঁকে সবাই মেনে নেবেন। আবার সে ক্ষেত্রে দলের হয়ে ভাল সংগঠকের কাজ যাঁরা করছেন, তাঁরা যাতে বাদ না পড়ে যান, সে দিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, দলে জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যেও ভিতরে ভিতরে বিরোধ রয়েছে। অবশ্য কেউই দলের নিয়ম-নীতির বাইরে গিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেন না। গত বছরের মাঝামাঝিতে নিখিলরঞ্জন দে-কে সরিয়ে মালতী রাভাকে দলের কোচবিহার জেলা সভানেত্রী করা হয়। তাঁর নেতৃত্বেই গত লোকসভা নির্বাচনে জেলা জুড়ে প্রচার চালিয়েছিল বিজেপি। কোচবিহার লোকসভা আসনে জয়ীও হয়। এ বারে সাংগঠনিক নির্বাচনে জেলা সভানেত্রী পদে পরিবর্তন করা হবে কি না, তা নিয়ে কর্মীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের একটি অংশ অবশ্য মনে করছে, জেলা সভানেত্রীর পদে পরিবর্তনের সুযোগ একেবারেই কম। কারণ, মালতীর কাজে দলের বড় অংশ সন্তুষ্ট। বিশেষ করে এই সময়ে দলের সংগঠন অনেকটাই শক্তিশালী হয়েছে। আরেকটি অংশ অবশ্য দাবি করেছে, লোকসভার পরে বিজেপির সংগঠনের শক্তি বাড়লেও পরে তা ধরে রাখা যায়নি। বিজেপির দখলে আসা অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতের ফের দখল নেয় তৃণমূল। এই অবস্থায় কী হবে সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে সবাই। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলাস্তরের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে দলের তরফে জানানো হয়েছে।