ডেঙ্গির পাশাপাশি জেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। প্রতীকী চিত্র।
জলপাইগুড়ি জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এখনও পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গিতে সংক্রমিত অন্তত ৩৪ জন। ডেঙ্গির পাশাপাশি জেলায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত পাঁচ জন। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
জেলার সব সরকারি হাসপাতালে ‘ফিভার ক্লিনিক’ খোলার পরিকল্পনা নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। জ্বরে আক্রান্তদের তথ্য সংগ্রহেও জোর দিতে বলছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। ‘ভেক্টর কন্ট্রোল টিম’-এর কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে বলেও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গির উপসর্গে এ বছর খানিকটা ফারাক দেখা যাচ্ছে। ডেঙ্গি আক্রান্তেদের মধ্যে অনেকেরই প্রথমে জ্বর থাকছে না। ডায়েরিয়ার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে আসছেন অনেকে। এই ধরনের রোগীদের ডেঙ্গি পরীক্ষা করানোর পরে রিপোর্ট ‘পজ়েটিভ’ মিলছে বলেও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। রোগীদের ‘ব্লাড কালচার’ করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। ডেঙ্গির সঙ্গেই জেলায় এ বছর ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন দু’জন। মালবাজার ব্লকে এক জন এবং নাগরাকাটা ব্লকে দু’জনের ম্যালেরিয়া সংক্রমণ ধরা পড়েছে । গত বছর জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪০।
জেলার সদর ব্লকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন চার জন। জলপাইগুড়ি পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত দু’জন। এ ছাড়া, রাজগঞ্জ ব্লকে চার জন, ময়নাগুড়ি ব্লকে তিন জন, ধূপগুড়ি ব্লকে এক জন, মালবাজার ব্লকে ন’জন, মেটেলি ব্লকে ছ’জন, নাগরাকাটা ব্লকে দু’জন এবং জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত শিলিগুড়ি পুর এলাকায় তিন জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। গত বছর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩,৯০৮। ডেঙ্গিতে গত বছর জেলায় মৃত্যু হয়েছিল চার জনের।
জেলার হাটবাজারে জমা জল সাফাইয়ের কাজ ঠিক ভাবে হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। জেলায় বেশ কয়েকটি অব্যবহৃত কুয়োর জলে মশার লার্ভা দেখা যাচ্ছে বলে খবর। জল জমে থাকছে গাড়ি মেরামতির গ্যারাজেও। জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধীন জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতাল চত্বরের নিকাশি নালার জমা জলেও মশার লার্ভা দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার বলেন, ‘‘ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ও মশাবাহিত রোগ রুখতে সচেতনতার প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে। সব হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’