বালুরঘাট বিলি রেলপথ। —নিজস্ব চিত্র।
এগিয়ে আসছে লোকসভা ভোট। কিন্তু এখনও দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট-হিলি রেলপথ সম্প্রসারণ কাজ তেমন এগোয়নি। জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে সেতু তৈরির জন্য দ্রুত কিছু জমি দিতে বলল রেল। বিজেপি সূত্রে খবর, রেল সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়িত না হলেও ভোটের আগে ‘তুরুপের তাস’ হিসাবে সেতুগুলিকে নিজেদের সাফল্য হিসাবে দেখাতে চাইছেন নেতাদের একাংশ। তৃণমূলের অভিযোগ, তাই বিজেপি রেলকে এবং রেল জেলা প্রশাসনকে কাজ তোলার চাপ দিচ্ছে। বিজেপির দাবি, তৃণমূল কাজ করতে দিচ্ছে না। সোমবার জমির টাকা পেতে প্রশাসনে দরবার করেন বেশ কয়েক জন জমিদাতা।
বালুরঘাট থেকে হিলি রেলপথ সম্প্রসারণ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের কাজ ২০২২ সালের শেষ দিকে শুরু হয়। সমীক্ষার পরে, ধাপে ধাপে বেশ কিছু জমিদাতাকে টাকাও বিলি করা হয়েছে। রেল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ২৯৮ কোটি টাকা জেলা প্রশাসনকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ, জমি হস্তান্তর হয়নি। যদিও তার আগেই আত্রেয়ী, কলকলা খাড়ি, যমুনা নদীর উপর ছ’টি বড় সেতু এবং দশটি ছোট কালভার্টের জন্য ৫০ কোটি টাকার টেন্ডার করে দিয়েছে রেল। এখন জমি অধিগ্রহণ ও হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় সময় লাগছে বলে 'নাভিশ্বাস' উঠেছে রেল এবং বিজেপির। জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘অনেকের জমির নথি ঠিক ছিল না। সেগুলি ঠিক করানো হয়েছে। ভাল করে যাচাই না করে জমি নিলে, পরবর্তী কালে মামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসন তা এড়িয়ে চলতে চায়।’’ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে খবর, প্রায় তিরিশ কিলোমিটার এলাকায় মৌজা ধরেই কাজ এগোনো সুবিধাজনক। কিন্তু রেল চাইছে, সেতুর জন্য ৫০টি প্লট আগে হস্তান্তর করুক জেলা প্রশাসন। তবে তা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, এ পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণের ৪০ কোটি টাকা জমিদাতাদের বিলি করা হয়েছে।
কাজ এগোচ্ছে না বলে অভিযোগ বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর। তাঁর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কাজ করবেন না, কাউকে করতেও দেবেন না। প্রশাসন সেটাই মেনে চলছে। মানুষের সুবিধার জন্য প্রকল্পটি দ্রুত হওয়া প্রয়োজন।’’ তৃণমূলের তরফে জেলার মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘বিজেপি কেন রেলকে দিয়ে এই প্রক্রিয়া শুরু করেনি? জমি অধিগ্রহণ ছেলের হাতের মোয়া নয়। বিজেপির রাজনীতির জন্য জেলা প্রশাসন চাপে পড়ে কাজ করবে না।’’