চিকিৎসক হয়ে গ্রামবাসীর সেবা করতে চান তরুণ।
বাবা পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন। লকডাউনের পর থেকে টোটো চালিয়ে সংসার খরচ চালান। সংসারে নিত্য অনটন। সেই পরিবারের ছেলে হজরত বেলাল সুযোগ পেলেন ডাক্তারি পড়ার। সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট) ১৭,৬০৬ র্যাঙ্ক করলেন তিনি। হজরত বেলালের এমন সাফল্যে পরিবার তো বটেই মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সিমলা গ্রামে খুশির হাওয়া। যদিও ছেলের ডাক্তারি পরীক্ষার খরচ কী ভাবে জোগাড় করবেন, তা ভেবে রাতের ঘুম উড়েছে বাবা-মায়ের।
হজরত বেলালের বাবা জাহাঙ্গির দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। তবে করোনা আবহে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। তার পর টোটো চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। তবে চরম আর্থিক অনটনের মধ্যেও ছেলেকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন দেখেছেন জহাঙ্গির। গত সপ্তাহেই নিটের ফল বেরিয়েছে। তাতে ছেলে জায়গা পেয়েছে শুনে উচ্ছ্বসিত তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘খুব কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছি। ছেলের জন্য গর্ববোধ হচ্ছে।’’ কিন্তু তার সঙ্গেই চিন্তা হচ্ছে, ছেলেকে ডাক্তারি পড়াবার জন্য খরচ কী ভাবে জোগাড় করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিজে যেটা পারিনি, শত কষ্ট হলেও ছেলেকে দিয়ে করাতে চাই। আমি চাই ও ভাল ভাবে পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হোক।’’ বেলালের মা হাজেরা বিবির কথায়, ‘‘খুব কষ্টের মধ্যে ছেলেকে মানুষ করছেন। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি, ছেলে যেন ভাল ডাক্তার হতে পারে।’’
সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল করতে পারায় বেলাল নিজেও ভীষণ খুশি। তিনি জানান, সীমিত সুযোগের মধ্যে এমন ফল করতে পেরে তিনি খুশি। তবে আরও ভাল করতে পারতেন। তাঁর ইচ্ছা, চিকিৎসক হয়ে গ্রামের মানুষের সেবা করার। তবে তাঁর স্বপ্নপূরণের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। কী ভাবে ডাক্তারি পড়ার খরচ জোগাড় করবেন সেই চিন্তায় পুরো পরিবার।