raiganj

Raiganj Medical collage: রাস্তায় সংসার! সন্তান আগলে স্বামীর মারের ভয়ে হাসপাতালের সামনে দিন কাটাচ্ছেন স্ত্রী

যাঁরা ছিতকে চেনেন, তাঁরা বলছেন ওঁর সব সময় মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২১ ২১:২৪
Share:

নিজস্ব চিত্র।

স্বামী তাড়িয়েছেন। বাপের বাড়িতেও ঢুকতে পারেন না। দুই সন্তান নিয়ে তাই মা আছেন রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের বাইরের রাস্তায়। হাসপাতালের কর্মীরা যা দিচ্ছেন, তাই খাচ্ছেন। এ ভাবেই কেটে গিয়েছে এক বছর। গৃহহীন ছিত সোরেন তবু বাড়ি ফিরতে চান না। শ্বশুরবাড়ি ফেরার কথা শুনলেই আঁতকে ওঠেন। বলেন, ‘‘স্বামী মারবে।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে চিকিৎসক বা নার্সরা শুধু চাইছেন, কোনও নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়ে বাকি জীবনটা যেন ভাল ভাবে কাটাতে পারেন ছিত।
যাঁরা ছিতকে চেনেন, তাঁরা বলছেন সব সময় ওঁর মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। তাই দুই শিশুকে নিয়ে প্রায় এক বছর ধরে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরেই দিন কাটছে তাঁর। সন্তানদের এক জনের বয়স তিন, অন্য জনের দুই। বাবার বাড়ি রায়গঞ্জ ব্লকের শেরপুরে এবং শ্বশুরবাড়ি কালিয়াগঞ্জে। কিন্তু বাড়ি থাকতেও গৃহহীন তিনি। ছিতের অভিযোগ, বাড়ির লোকের দ্বারা অত্যাচারিত এবং অবেহেলিত তিনি। তাই রাস্তায় আছেন। আর বাড়িতে ফিরতে চান না। দিন কাটছে কী ভাবে? নিরুত্তাপ ছিতের জবাব, ‘‘কেটে যাচ্ছে, কিন্তু ভয় বাচ্চাদের নিয়ে। চিন্তা হয় ভবিষ্যতের জন্য। তবে বাড়ি ফিরতে চাই না।’’

Advertisement

আপন খেয়ালেই তিনি থাকেন। কখনও হাসছেন। কখনও কথার জবাব দিচ্ছেন। কখনও চুপ করে থাকছেন। কয়েক জন সহৃদয় জামাকাপড় দিয়েছেন, তাই দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেন। রায়গঞ্জ মেডিক্যালের ফিভার ক্লিনিকের সামনের রাস্তায় চেনা দৃশ্যে ছিতদের সংসার। বৃষ্টি হলে অবশ্য ছেলেদের নিয়ে করিডোরের ছাউনির নীচে আশ্রয় নেন। কিন্তু বাড়ি থাকলেও ফিরে যাওয়ার কোনও উপায় নেই।

রায়গঞ্জ মেডিক্যালের অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মী সংগঠনের সভাপতি প্রশান্ত মল্লিক বলেন, ‘‘বহু দিন ধরে দেখছি ওই মহিলা তাঁর দুই শিশুকে নিয়ে এই হাসপাতাল চত্বরে থাকছেন। আমরা কিছু সাহায্য করি। তবে জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ওই মহিলার পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি।’’

Advertisement

রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের সহকারি সুপার অভীক মাইতি বলেছেন, ‘‘আমরা বিষয়টি দেখেছি। পুলিশ প্রশাসনকে ওঁর বিষয়ে জানাব। কিছু বিহিত হলে আমাদেরও ভাল লাগবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement