কয়েক মাস আগে পাহাড়ে অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার ছবি। ফাইল চিত্র — ফাইল চিত্র।
দার্জিলিং শহরে আবার লুকিয়েচুরিয়ে বেআইনি নির্মাণ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলল হামরো পার্টি। দলের পুরসভার নেতা তথা প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেল সোমবার এই অভিযোগ করেছেন। উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের কথা মাথায় রেখে পুরসভার কাছে তিনি ব্যবস্থা নেওয়া আর্জি জানিয়েছেন।
তাঁর অভিযোগ, দার্জিলিং শহরে নিয়ম ভেঙে ৪৬টি বাড়িতে নির্মাণ হচ্ছিল। তাঁদের বোর্ড সেগুলির কাজ বন্ধ করে। প্রত্যেক বাড়ির মালিককে নোটিস ধরা হয়। দু’টি বাড়ির কাজ ভেঙেও দেওয়া হয়েছিল। বোর্ডের ক্ষমতা বদল হতেই, আবার সে কাজ হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ।রীতেশের দাবি, ‘‘আমাদের বোর্ডকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য নানা চক্রান্ত হয়েছে। বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ভোটের আগে থেকে আমরা ব্যবস্থা নেব বলেছিলাম। ক্ষমতা এসে কাজও করি। এ বার আমাদের বোর্ড থেকে সরানো হল। আর তার সঙ্গে পাহাড়ে বেআইনি নির্মাণ চালু হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, পুরসভায় বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি তোলা হবে। পুর চেয়ারম্যানকে তা জানানো হয়েছে।দার্জিলিংবাসীর কাছে হামরো পার্টির তরফে বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে সরব হয়ে আহ্বান করা হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র দীপু ছেত্রী বলেন, ‘‘পাহাড় কোনও নেতা বা দলের নয়। পাহাড় আমাদের সবার। একে রক্ষা করতে হবে। আর দার্জিলিঙে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ না করা গেলে, ভবিষ্যতে তা আর একটা জোশীমঠ হতে পারে।’’ হামরো পার্টির অভিযোগ প্রসঙ্গে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি পুরসভার নতুন চেয়ারম্যান দীপেন ঠাকুরি। শুধু অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে ক্ষমতাসীন বোর্ডের দল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি তথা ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘পুরসভা নির্মাণকাজে লক্ষ্য রাখবে। অভিযোগ পেলে, খতিয়ে অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’দার্জিলিং শহরে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে হামরো পার্টির বোর্ড অভিযান চালায়। হামরো পার্টির নেতাদের অভিযোগ, বহুতল-ক্রংক্রিটের জঙ্গলে হাত দেওয়াতেই বোর্ড হারাতে হয়েছে দলকে। পুরসভা সূত্রের খবর, পুর আইন অনুসারে, দার্জিলিং শহরে ১১.৫ মিটার উচ্চতার মধ্যে বাড়ি তৈরির নিয়ম রয়েছে। কালিম্পং, মিরিক বা কার্শিয়াঙেও একই পুর আইন মেনে চলার কথা। অভিযোগ, গত কয়েক দশকে দার্জিলিং-সহ পাহাড়ের শহরগুলিতে বেআইনি নানা ধরনের নির্মাণ এবং বহুতলে ছেয়ে গিয়েছে। বাড়ির নকশা পুরসভা থেকে অনুমোদন বা পাশ না করে কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, অনেক জায়গায় পাহাড়ের ঢালের পাথর কেটে বহুতল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে নিকাশির ব্যবস্থা, পার্কিং যথাযথ ভাবে তৈরি হয়নি। একটি বহুতলের সঙ্গে আর একটি ভবন তৈরি করা হয়েছে। বাজার, দোকান, হোটেল, রেস্তরাঁ বা অফিস এলাকা নয়, ব্যক্তিগত বাড়ির ক্ষেত্রেও নিয়ম ভাঙা হচ্ছে বলে অভিযোগ।