বিয়ের এক মাসের মধ্যে রহস্যজনক মৃত্যু হল বছর ষোলোর এক নাবালিকার।
নবম শ্রেণির ছাত্রীটি প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল৷ মন্দিরে গিয়ে বিয়েও করে তারা৷ এর কিছুদিন পর প্রেমিকের বাড়ি ফিরলে সেখানে তাদের সামাজিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়৷ সেই বিয়ের এক মাসের মধ্যেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়। বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাকে৷ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ওই কিশোরীর স্বামীকে আটক করেছে৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই কিশোরীর নাম লিপিকা রায় (১৬)৷ তার বাড়ি জলপাইগুড়ির বেলাকোবার রাঙ্গারবাড়ি এলাকায়৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় মুদিপাড়া নগেন্দ্রনাথ হাইস্কুলের ছাত্রী লিপিকা গত পয়লা ফেব্রুয়ারি বেলাকোবার বামনপাড়ার বাসিন্দা গাড়ি চালক স্বপন রায়ের সঙ্গে পালিয়ে যায়৷ লিপিকার কাকা রথীন রায় বলেন, কিছুদিন পর তারা দুজনেই স্বপনের বাড়ি ফিরে আসে৷ গত ৯ মার্চ তাদের বিয়ে দেওয়া হয়৷
কিশোরীর বাবা বনেশ্বর রায়ের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য মেয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা৷ চাপে পড়ে এক মাসের মধ্যে বাড়ি থেকে চার-পাঁচবার টাকা নিয়ে যায় সে৷ তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আচমকাই তাদের জানানো হয় লিপিকা আত্মহত্যা করেছে৷ খবর পেয়ে তারা গিয়ে দেখেন দেহটি বিছানার ওপর শোয়ানো অবস্থায় রয়েছে৷ কিশোরীর কাকা রথীনবাবু বলেন, ‘‘সেই সময় ঘরে লোহার রডে বাঁধা অবস্থায় একটি কাপড় ঝুলছিল৷ কিন্তু লিপিকার গলায় যে দাগ ছিল তা কখনই সেই কাপড়ের নয়।’’
স্বপন এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বনেশ্বরবাবু৷ পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই স্বপনকে আটক করা হয়েছে৷ বাকিরা পলাতক৷ জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। একজনকে আটক করে জেরা চলছে।’’
কিন্তু ১৮ বছর না হতেই কেন মেয়ের বিয়ে দিলেন তাঁরা? বনেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘পালিয়ে গিয়ে ওরা মন্দিরে বিয়ে করে ফেলেছিল৷ তারপর ছেলেটির বাড়িতে আসে৷ তখন মেয়েকে জোর করে নিয়ে এসে কি করতাম৷ কিন্ত এর পরিণতি যে এমন হবে ভাবতে পারিনি৷’’