প্রতীকী চিত্র
দু’দিন আগে প্রতিবেশীর গাছ থেকে আম পেড়েছিল বছর আঠারোর সাহিন আখতার। অভিযোগ, বাগানের মালিক তাকে ধরে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। তার পরে গলায় জুতোর মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো হয় ওই কিশোরকে। সাহিনের বাবা-মা গিয়ে প্রতিবাদ করায় তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার তার মাথা ন্যাড়া করে মুখে চুনকালি লাগিয়ে এলাকায় ঘোরানো হবে বলে বন্ধুদের কাছে কানাঘুষো শুনেছিল সাহিন। সে কথা বুধবার রাতে বাবাকেও বলেছিল। সকালে উঠে বাবা দেখেন, শোওয়ার ঘরে ঝুলছে ছেলের নিথর দেহ।
মালদহের রতুয়ার মাকাইয়া ২ নম্বর কলোনি এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে ওই ঘটনা ঘটে। এক বার অপমানিত হওয়ার পরে ফের অপমানিত হওয়ার ভয়ে ওই কিশোর আত্মঘাতী হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, ঘটনার পরেই সপরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন আমবাগানের মালিক। চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছিল সাহিন। সাহিনদের উল্টোদিকেই বাড়ি শামিম আখতারের। অবস্থাপন্ন শামিম এলাকায় কবিরাজ বলে পরিচিত। সাহিনের বাবা ক্ষুদ্র চাষি লালা মহম্মদ। অভিযোগ, মঙ্গলবার একটি গাছ থেকে কয়েকটি আম পাড়ে সাহিন। অভিযোগ, দেখতে পেয়ে সাহিনকে ধরে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধরের পর জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরান শামিম। তার পর থেকে লজ্জায় আর বাড়ি থেকে বার হয়নি সাহিন।
পারিবারিক সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে মাথা ন্যাড়া করে মুখে চুনকালি লাগিয়ে তাকে এলাকায় ঘোরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে বন্ধুদের কাছে শুনেছিল সাহিন। তার পরে আরও বিমর্ষ হয়ে পড়ে সে।
তার বাবা লাল মহম্মদ বলেন, ‘‘কয়েকটা আম পাড়ায় দু’দিন আগের অপমান ছেলেটা ভুলতে পারেনি। তার পরেও ওরা ফের মুখে চুনকালি দিয়ে এলাকায় ঘোরানোর পরিকল্পনা করেছে জেনে ও ভেঙে পড়ে। ওদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’’
যদিও শামিমের আত্মীয় মাসুদ আলম বলেন, ‘‘সাহিনের বাবার কাছেই ছেলের বিচার চাওয়া হয়েছিল। ওরাই সাহিনের গলায় জুতোর মালা পরিয়ে শামিমের বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। ওকে ক্ষমাও করে দেওয়া হয়। ওর মুখে চুনকালি দিয়ে ঘোরানোর চেষ্টার যে কথা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়।’’