Helipad

মমতার হেলিপ্যাডে নষ্ট ‘ফুসফুস’, ক্ষোভ

কিন্তু পুরপ্রধানের এই প্রতিশ্রুতির পরেও শহরবাসীর একাংশের প্রশ্ন, পুরনো শাখাপ্রশাখা থাকা পূর্ণাঙ্গ একটি গাছের বিকল্প কি চারাগাছ হতে পারে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বুনিয়াদপুর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩০
Share:

কোপ: এখানেই সভার জন্য গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। বুনিয়াদপুরে। নিজস্ব চিত্র

বুনিয়াদপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্ভাব্য জনসভার প্রস্তুতি-পর্বে হেলিপ্যাড গড়তে বৃক্ষচ্ছেদনের অভিযোগ উঠল। তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন শহরবাসীর একাংশ, পরিবেশ সংগঠন, বিরোধী দল। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য জনসভার পরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে কেটে ফেলা গাছের ‘পাঁচগুণ’ বেশি গাছ লাগানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

Advertisement

বুনিয়াদপুরের পুরপ্রধান অখিল বর্মণ বলেন, ‘‘এমনিতেই ওই গাছগুলির অনেক বয়স হয়ে গিয়েছিল। আর একটা ভাল কাজ করতে হলে কিছু খারাপ কাজ হয়। জনসভা মিটলেই ওখানে আমরা পাঁচগুণ বেশি গাছ লাগিয়ে দেব।’’

কিন্তু পুরপ্রধানের এই প্রতিশ্রুতির পরেও শহরবাসীর একাংশের প্রশ্ন, পুরনো শাখাপ্রশাখা থাকা পূর্ণাঙ্গ একটি গাছের বিকল্প কি চারাগাছ হতে পারে?

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে খবর, মার্চেই বুনিয়াদপুরে জনসভা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। বুনিয়াদপুর ফুটবল মাঠকে সেই জনসভার জন্য তৈরি করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, মমতার হেলিকপ্টার মঞ্চের পিছনেই নামানো হবে। সে জন্য হেলিপ্যাড তৈরি করতেই কাটা হচ্ছে গাছ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা, বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা গাছ না কাটতে প্রশাসন ও স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, তার তোয়াক্কা না করেই বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মাঠের পাশে গাছগুলিকে কেটে ফেলা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, এর আগেও একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রী বুনিয়াদপুরে সভা করেছেন। সভার জন্য নারায়ণপুর, রেল মাঠ, বংশীহারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে হেলিপ্যাড তৈরি করা যেতে পারত। তাতে গাছ কাটার প্রয়োজন হত না। ফাঁকা জায়গায় হেলিকপ্টারের অবতরণেও সুবিধা হত।

বুনিয়াদপুরের বাসিন্দা কবি গোবিন্দ তালুকদার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এ কথা জানতে পারলে, আমার বিশ্বাস তিনিও এই বৃক্ষচ্ছেদনকে সমর্থন করতেন না। হেলিপ্যাডের জন্য বুনিয়াদপুরে অনেক জায়গা ছিল।’’

বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, এমনিতেই নগরায়ণের জন্য বুনিয়াদপুর শহরে প্রচুর গাছ কাটা পড়েছে। শহরে গাছ না থাকায় গরমে নাজেহাল হন বাসিন্দারা। এমন পরিস্থিতিতে হেলিপ্যাডের জন্য শহরের বুকে আরও গাছ কেটে ফেলা হল।

এ নিয়ে সিপিএম নেতা গৌতম গোস্বামী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মুখে বলেন এক, কাজে করেন আর এক। গ্রিনসিটির কথা বলে গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছেন। এটা অন্যায়। প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’

জেলার পরিবেশপ্রেমীরাও এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পরিবেশপ্রেমী তুহিনশুভ্র মণ্ডল, অমর পাল, অরিন্দম সিংহ রানা-সহ বুনিয়াদপুরের একাধিক বাসিন্দা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁদের দাবি, শহরের ‘ফুসফুস’কে এ ভাবে নষ্ট করা হল।

প্রতিবাদ বলেও পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘নিয়ম মেনেই গাছ কাটা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement