Coronavirus

লকডাউনে কালীচরণের ভরসা জনতা কিচেন

কোচবিহারের মিনিবাস স্ট্যান্ডের একটি হোটেলের প্রধান পাচক ছিলেন কালীচরণ। লকডাউন শুরু হতেই সেই হোটেল বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০২:২৬
Share:

কালীচরণ মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

পেশায় তিনি এক হোটেলের প্রধান পাচক। কিন্তু ৫৫ দিন ধরে তাঁর পঞ্চব্যঞ্জনের আস্বাদন থেকে বঞ্চিত খাদ্যরসিকেরা। লকডাউনের জেরে তালা পড়েছে হোটেলের। কাজ হারিয়ে কালীচরণ মাহাতোর প্রায় দিশেহারা অবস্থা। এই বিপদের সময় প্রাক্তন সাংসদ তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায় চালু করেন জনতা কিচেন। সেখানেই সাধারণ মানুষের রান্নার ডাক পান কালীচরণ। ন’দিন তিনি রান্নার কাজ করেছেন এখানে। সেখানে টাকা পেয়ে এখন কিছুটা হলেও স্বস্তিতে তিনি।

Advertisement

কোচবিহারের মিনিবাস স্ট্যান্ডের একটি হোটেলের প্রধান পাচক ছিলেন কালীচরণ। লকডাউন শুরু হতেই সেই হোটেল বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর হিসেবে, ৫৫ দিন ধরে হোটেল বন্ধ। এই সময়ের মধ্যে ন’দিন তিনি জনতা কিচেনের রান্নার দায়িত্ব সামলেছেন। তাতে কিছুটা আয় হয়েছে তাঁর। কালীচরণ বলেন, “জনতা কিচেনের কয়েকদিনের রান্নায় কিছু আয় হয়েছে। এমন ভাবে রান্নার দায়িত্ব পেলে ভাল হয়।” কোচবিহার শহরেরই সাহিত্যসভা বাই লেনে কালীচরণের বাড়ি। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে তাঁর সংসার।

কালীচরণ জানান, তিনি হোটেল থেকে দৈনিক ৩৫০ টাকা করে পেতেন। এ ছাড়া, একটি জায়গায় রাত পাহারার কাজও করেন তিনি। সেখান থেকে দেড় হাজার টাকা তিনি পেতেন। দু’টি আয়ে তাঁর সংসার চলে যেত। আচমকা ওই হোটেলের আয় বন্ধ হয়ে যায়। দেড় হাজার টাকা দিয়ে তিনি কী ভাবে সংসার সামলাবেন, তা নিয়ে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। রেশন থেকে চাল-আটা এবং কিছু ত্রাণ-সাহায্য দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তাঁর সংসার চলছিল। এই সময়ে প্রাক্তন সাংসদ জনতা কিচেন শুরু করেন। সেখানেই ন’দিন তিনি রান্নার কাজ করেছেন। তিনি বলেন, “পয়সা একটু কম হলেও অসুবিধে নেই। জনতা কিচেন তো সাধারণ মানুষের জন্য। তার মধ্যেই যা আয় হয়েছে তাই আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। এমন ভাবে রান্নার কাজ পেলে ভাল হয়।”

Advertisement

সাহিত্যসভার ওই মোড়েই ফুটপাতে একটি হোটেল চালাতেন দিলীপ মাহাতো। সেই হোটেলও একই সময় ধরে বন্ধ। দিলীপও রান্নায় কালীচরণের সঙ্গে ছিলেন। সাহিত্যসভা বাইলেনের বাসিন্দা দিলীপও জানান, স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং এক ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংসার। ছেলেমেয়েরা সবাই পড়াশোনা করেন। তাঁর হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি খুব অসুবিধায় পড়েছেন। তাঁর কথায়, “জনতা কিচেন বা গরিবদের জন্য রান্না হলে আমরা করে দেব। সেখানে দু’পয়সা কম হলেও কাজ করব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement