ছবি: সংগৃহীত।
জুতো যেন পিছন ছাড়ছে না মোর্চা নেতা বিমল গুরুংয়ের। ২০১৭ সালের আন্দোলনে পুলিশ অফিসার অমিতাভ মালিকের হত্যার পর সিংলার জঙ্গলে অভিযান হয়। সেখান থেকে নানা জিনিসপত্র সঙ্গে উদ্ধার হয়েছিল কয়েক জোড়া জুতো। তদন্তকারীরা দাবি করেছিলেন, পুলিশি হানায় জুতো ফেলে পালিয়েছিলেন গুরুং ও তাঁর সঙ্গীরা। যদিও তার সত্যতা যাচাই সম্ভব হয়নি। গুরুংও তিন বছর পর পাহাড়ে ফিরেছেন। কিন্তু প্রসঙ্গ যা-ই হোক না কেন, জুতো তাঁর পিছন ছাড়ছে না। গত কয়েকদিন ধরে তাই জুতো-কাণ্ডে সরগরম দার্জিলিং।
গত রবিবার মিরিকের একটি সভার পর গুরুংয়ের সঙ্গে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার কথার লড়াই চলছে একপাটি জুতো ঘিরে। মিরিকে গুরুং বলেছেন, ‘‘আমি বিস্তার গোপন তথ্য ফাঁস করলে দল ওকে তাড়িয়ে দেবে। পাহাড়বাসীর দাবিকে দাবিয়ে রাখতে ও কী কী করছে, বলেছে সব আমার কাছে রেকর্ডিং রয়েছে। ওর কথোপকথন আমার কাছে আছে।’’ যা শুনে সাংসদ বিস্তাও বসে থাকতে পারেননি। মঙ্গলবার মোটর স্ট্যান্ডের সভায় তিনি পরপর অভিযোগের তির ছুড়েছেন এক সময়ের সহকর্মী গুরুংয়ের দিকে। নাম না করে তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেউ কেউ তো টাকা ছাড়া কিছু বোঝে না। দিল্লিতে থাকার পর খালি টাকা চাইত। শুধু বলব, ওর যাবতীয় তথ্য শুধু কেন, জুতোর মাপও জানা আছে। আরও তথ্য আছে সময়মতো বলে দেব।’’
এর পর পাল্টা গুরুংও বলেন, ‘‘একবার জন্মদিনে জুতো উপহার দিয়ে সাংসদ জুতোর মাপের কথা বলছেন! ছিঃ! কী নিম্ন চিন্তাভাবনা। আমি স্পিডপোস্টে জুতো ফেরত পাঠাচ্ছি।’’ সেইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘সাংসদ আলাদা রাজ্যের কথা, ১১ জনগোষ্ঠীর কথা, গোর্খাদের কথার বদলে জুতোর কথা বলছেন। বিজেপি এবং তাঁর নেতার যে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন এই ধরনের কথাবার্তাই তার প্রমাণ।’’
গত অক্টোবরে তিন বছর পর গুরুং পাহাড়ে ফেরেন। সেই সময় সাংসদ প্রথমে গুরুং তাঁদের সঙ্গ ছাড়ায় ক্ষতির সম্ভাবনার কথাও বলেন। পুরনো বন্ধু আগামীদিনে আবার তাঁদের পাশে আসবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রথম থেকেই সুর চড়িয়ে রাখছিলেন গুরুং। তাঁর জন্যই বিস্তা সাংসদ হয়েছেন বলে দাবি করে তাঁকে পদত্যাগ করতেও বলেন। সাংসদ সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। এর পরে পরিবর্তন যাত্রায় দিলীপ ঘোষের সঙ্গে রাজু বিস্তাকেও কালো পতাকা, বিক্ষোভ দেখান বিমলপন্থীরা। তার আগে মিরিকে বসে বিস্তার গোপন কথা ফাঁসের হুমকিও দেন বিমল গুরুং।
পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতারা মনে করছেন, পরপর এসব চলতে থাকায় নিজেকে আর সংযত না রেখে বিজেপি সাংসদ পাল্টা আক্রমণের পথে নামেন। আর সেখানেই উঠে আসে গুরুংয়ের জুতো প্রসঙ্গ। মোর্চার অন্দরের খবর, নানা ধরনের জুতো, বিশেষ করে স্নিকার গুরুংয়ের পছন্দের তালিকায় প্রথমের দিকেই রয়েছে।