স্ট্রেচার পর্যাপ্ত নেই। এ ভাবেই রোগীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শিলিগুড়ি হাসপাতালে। ছবি:বিশ্বরূপ বসাক
স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল পরিদর্শনে আসতেই রাতারাতি ভোল বদলে গেল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের। শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতরের নয় সদস্যের প্রতিনধি দল হাসপাতালে বিভিন্ন পরিষেবার গুণমান খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে আসেন। তিন দিন ধরে পরিদর্শন চলবেন।
অভিযোগ, অন্য সময় শয্যার চাদর বদলানো হয় না দু’তিন দিন ধরে। শয্যার পাশে ময়লা ফেলার গামলা উপচে পড়লেও তা সাফ করা হয় না। শৌচাগার পরিষ্কার হয় না। মশারি চাইলেও মেলে না। অথচ বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পরিস্থিতি অন্য রকম। না চাইতেই মশারি দিয়ে যান স্বাস্থ্যকর্মীরা। শুক্রবার ভোরে শৌচাগার পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। শয্যার পাশে আবর্জনা ফেলার নোংরা প্লাস্টিকের গামলা সরিয়ে নতুন বালতি সাজিয়ে দিয়ে গিয়েছেন কর্মীরা। পুরনো চাদর বদলে নতুন চাদর পেতে দেওয়া হয়েছে সমস্ত শয্যায়। কিন্তু সে সব কথাই ফাঁস করে দিলেন রোগীরা। পরিদর্শনে আসা প্রতিনিধিদের কাছে সে কথা বলে দেন তাঁরা।
শল্য বিভাগে ভর্তি লালন প্রসাদ সারাফ, বাবলু মণ্ডলরা বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে আছি। বিছানার চাদর বদলানো হত না। মশারি দিত না। ওয়ার্ড নোংরা পড়ে থাকত। অথচ এদিন ভোর বেলাতেই নতুন চাদর পেতে দেয়। শৌচাগার পরিষ্কার করে ঝা চকচকে করা হয়। তা দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়। পরে জানতে পারি স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন পরিদর্শনে আসছেন। তাই এ সব। ওই প্রতিনিধিদের জানিয়েছি।’’
রাজ্যের হাসপাতালগুলির পরিষেবার গুণমান দেখার দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার সন্দীপ সান্যাল প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন পরিষেবার মান ঠিক রয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, সম্প্রতি কায়াকল্প প্রকল্পে রাজ্যে সেরা সম্মান পায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল। তার জন্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে ৫০ লক্ষ টাকা মিলবে। যে প্রতিনিধি দল এসেছে তাদের নিরিখে নির্দিষ্ট গুণমান বজায় রাখতে পারলে এর পর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করবে। সেই মতো গুণমান বজায় রাখতে পারলে শয্যা পিছু পাঁচ হাজার টাকা সরকারি অনুদান মিলবে তিন বছর। হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওয়ার্ড নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। কোথাও কোনও সমস্যা থাকলে নিশ্চয়ই দেখা হবে।’’