ম্যাস্টিক রাস্তার শনির দশা

পিচ উঠে দেহ কঙ্কালসার

দিন সাতেকের বৃষ্টিতেই বেহাল হয়ে পড়েছে বহু কোটি টাকায় তৈরি শিলিগুড়ির ‘ম্যাস্টিক রোড’-এর বেশ কিছু এলাকা। হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোড তো বটেই, শিলিগুড়ি শহরের পাড়ার মধ্যেকার বেশ কিছু রাস্তায় ছোট-মাঝারি গর্ত হয়ে গিয়েছে। বিটুমিন-পাথরের আস্তরণ উঠে গিয়ে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ০২:০৫
Share:

সেবক রোড। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

দিন সাতেকের বৃষ্টিতেই বেহাল হয়ে পড়েছে বহু কোটি টাকায় তৈরি শিলিগুড়ির ‘ম্যাস্টিক রোড’-এর বেশ কিছু এলাকা। হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোড তো বটেই, শিলিগুড়ি শহরের পাড়ার মধ্যেকার বেশ কিছু রাস্তায় ছোট-মাঝারি গর্ত হয়ে গিয়েছে। বিটুমিন-পাথরের আস্তরণ উঠে গিয়ে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। মহাবীরস্থানের উড়ালপুল (দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ উডালপুল) থেকে হাসমি চকের দিকে নামার সময়ে একটি জায়গায় পিচের স্তর উঠে পাথর বেরিয়ে পড়েছে। রোজই সেখানে ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে। শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ইস্টার্ন বাইপাসের পিচের চাদর উঠে গিয়ে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, ওই রাস্তার একাংশ তৈরি করেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। বাকিটা পূর্ত দফতরের তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছে। শহরের ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারদের একাংশের সন্দেহ, যে সব এলাকায় রাস্তার কাজ নিম্নমানের, সেখানে অনেক জায়গায় ভেঙে গিয়েছে। ফলে, তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে। পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আজ, শুক্রবার উত্তরবঙ্গ উন্ননয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকার রাস্তার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের দফতরের পক্ষ থেকে সঠিক গুণমান বজায় রেখে কাজ করানো হয়েছে। কোথাও প্রযুক্তিগত কারণে রাস্তার সামান্য অংশ খারাপ হয়ে থাকতে পারে। আমি নিজে ঘুরে সব দেখার পরে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত যাতে ভাঙা জায়গা মেরামত হয় সেই পদক্ষেপ করব।’’

বস্তুত, প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উদ্যোগেই শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় ‘ম্যাস্টিক রোড’ হয়। গৌতমবাবুর চেষ্টাতেই ইস্টার্ন বাইপাস ছাড়া শিলিগুড়ি শহরের মধ্যে সুভাষপল্লি, আসিঘর, হাকিমপাড়া, কলেজেপাড়াতেও ‘ম্যাস্টিক রোড’ হয়। সাধারণ পিচের রাস্তার তুলনায় ম্যাস্টিক রোড বেশি শক্তপোক্ত হওয়ার কথা। তা কোথাও দেড় বছরের মধ্যে, কোথাও এক বছরের মধ্যে কেন গর্ত হয়ে যাবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে ইঞ্জিনিয়ার মহলেই।

Advertisement

সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন।

এই ব্যাপারে প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা বর্তমানে পর্যটন মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, ‘‘ইস্টার্ন বাইপাসের রাস্তা তিন বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে। ওই রাস্তায় ইদানিং অনেক ভারী গাড়ি চলছে। তা ছাড়া ইস্টার্ন বাইপাসের অনেকটাই ম্যাস্টিক ছাড়া। মোড়গুলি ম্যাস্টিক করা হয়েছিল। জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ওই রাস্তার একাংশ পূর্ত দফতর এবং একাংশ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর করেছিল। রাস্তাটি দেখভালের জন্য পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে। যে অংশ ক্ষতি হয়েছে, তারা ঠিক করে দেবে।’’

মন্ত্রীর দাবি, তিন বছরের মধ্যে রাস্তার কোনও ক্ষতি হলে ঠিকাদার সংস্থাই করে দেবে। এ বছর তার মধ্যে প্রবল বৃষ্টিতে ম্যাস্টিক রোডের কিছু জায়গায় ক্ষতি হয়েছে। পূর্ত দফতরের তরফে তৈরি সেবক রোড়, হিলকার্ট রোড়ের অনেক অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে ইস্টার্ন বাইপাসের যে ম্যাস্টিক রোড করা হয়েছে, তা খুব বেশি ভারী গাড়ি চালানোর মতো করে করা হয়নি। কেননা, তা করতে আরও অনেক খরচ দরকার হত। তিনি বলেন, ‘‘তবে পূর্ত দফতর যে অংশ করেছে তারা বেশ ভাল করেই করেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement