ধূপগুড়ি ব্লকে ‘বেহাল’ গোসাঁইহাট ইকো-পার্ক। —নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে এসে পর্যটনের বিকাশের কথা বলেছেন, জোর দিয়েছেন চা বাগান এলাকায় হোম-স্টে তৈরিতে। অন্য দিকে, ঠিক তখনই প্রশাসনের গাফিলতিতে গোঁসাইহাট ইকো-পার্ক ও সংলগ্ন বনবস্তি এলাকায় পর্যটনের সম্ভাবনা নষ্ট হতে বসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর বক্তব্য, মোরাঘাট বনাঞ্চল ঘিরে জঙ্গল সাফারি চালু করার আশ্বাসে ওই এলাকা সংলগ্ন মোগলকাটা, মেলা বনবস্তিতে রাভা সম্প্রদায়ের অনেকে হোম-স্টে তৈরি করেছিলেন। অভিযোগ, শেষ পর্যন্ত আর জঙ্গল সাফারি চালু হয়নি ওই এলাকায়। তার জেরে, পর্যটকের অভাবে ধুঁকছে সে সব হোম-স্টে।
পাশাপাশি, ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে মোরাঘাট বনাঞ্চল এলাকায় তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের আমলে গোঁসাইহাট ইকো-পার্ক তৈরি করা হয়েছিল। পার্ক সংলগ্ন বিশাল ঝিলে শীতের মরসুমে ভিড় জমত পরিযায়ী পাখির। সেই পাখিদের দেখতে প্রতি দিন পর্যটকের ভিড় জমত ওই এলাকায়। অভিযোগ, এখন সেই ঝিলও বেহাল। দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয় না। সে কারণে পাখির সংখ্যা দিন দিন কমছে। অভিযোগ, ইকো-পার্কের ভিতরের অবস্থা আরও শোচনীয়। পাখি দেখার জন্য সেখানে একটি ‘ওয়াচ টাওয়ার’ তৈরি করা হয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটি কার্যত ভেঙে পড়েছে।
রাভা ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সম্পাদক রবি রাভা বলেন, ‘‘গোঁসাইহাট ইকো-পার্ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি পার্কটিকে সাজিয়ে তোলার খবর রয়েছে।’’
এলাকার কয়েকটি হোম-স্টের মালিকেরা বলেন, ‘‘সরকারি সহযোগিতা এবং কিছু ঋণ নিয়ে হোম-স্টে তৈরি করেছিলাম। কথা হয়েছিল, মোরাঘাট বনাঞ্চলে জঙ্গল সাফারি শুরু হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় হোম-স্টে নিয়ে সঙ্কটে পড়েছি। আশা করছি, সরকার এই বিষয়ে সদর্থক পদক্ষেপ করবে।’’ জলপাইগুড়ির বিভাগীয় বন আধিকারিক বিকাশ ভি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে গোঁসাইহাট ইকো-পার্কের সংস্কার এবং জঙ্গল সাফারি চালু করার বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’’