District News

ফেলে দেওয়া নথি ঘেঁটে ইতিহাসের ভাঁড়ার গড়ছেন ইটাহারের ওসি

অভিজিৎ ইতিহাসে স্নাতকোত্তর। ব্যক্তিজীবনে অতীতপ্রেমী মানুষ। সেই ভালবাসার তাগিদেই আজ তাঁর সংগ্রহে অসংখ্য প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য সব নথি৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইটাহার শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৫:১৭
Share:

অভিজিৎ ইতিহাসে স্নাতকোত্তর। ব্যক্তিজীবনে অতীতপ্রেমী মানুষ। সেই ভালবাসার তাগিদেই আজ তাঁর সংগ্রহে অসংখ্য প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য সব নথি৷

চোর-ডাকাত নিয়ে কারবার তাঁর। কিন্তু সে সবের পাশাপাশি তাঁর মন রয়েছে ইতিহাসেও। জেলার পুলিশ সুপারকে প্রায় ১০০ বছর আগে নিজের হাতে লেখা তৎকালীন ডিআইজি-র চিঠি। সেই সময় বঙ্গ প্রদেশে থাকা ইটাহার থানার খতিয়ানের আসল নথি। ১৯২৫-এ ইম্পিরিয়াল পুলিশ প্রকাশিত বঙ্গের ডাকাতদলের ইতিবৃত্তান্তের বই। নকশাল আমলের রাজনৈতিক নেতাদের হাতে লেখা বিবরণ। জরুরি ফাইল। এ সবই আছে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার ওসি অভিজিৎ দত্তের সংগ্রহে।

Advertisement

অভিজিৎ ইতিহাসে স্নাতকোত্তর। ব্যক্তিজীবনে অতীতপ্রেমী মানুষ। সেই ভালবাসার তাগিদেই আজ তাঁর সংগ্রহে অসংখ্য প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য সব নথি৷ ১৩ বছর ধরে পুলিশের চাকরিতে রয়েছেন। চাকরি জীবনে একের পর এক থানায় বদলি হলেও অভিজিতের লক্ষ্য কিন্তু একটাই। থানায় যে নথি ডাস্টবিনে ফেলে রাখা হয়, নষ্ট করে ফেলার জন্য, তা ঘেঁটেই তিনি খুঁজে বেড়ান ইতিহাসের দলিল। অবসর সময়ে সেই সব ঘেঁটে প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য সব কাগজপত্র সংগ্রহ করেন। যে থানায় তাঁর কাজ, সেই এলাকার ইতিহাস খুঁজে বেড়ান। সেই অভ্যাসের কারণেই ধীরে ধীরে তাঁর সংগ্রহ প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য সব সম্ভারে ভরে উঠেছে।

অভিজিতের কাছে রয়েছে ১৯২০ থেকে ১৯৭২ সালের বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য নথি। আছে ১৯৩০ সালের ‘দ্য বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেডমেন্ট অ্যাক্ট’। ১৯২৫ সালে ইম্পেরিয়াল পুলিশ প্রকাশিত বই ‘দ্য লিস্ট অব অ্যাকটিভ ডকোয়েট গ্যাং ইন বেঙ্গল’। এই বইয়ে ১৯০০ সাল থেকে ১৯২৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গদেশে অর্থাৎ এ পার বাংলা, ও পার বাংলা, ত্রিপুরা— সব মিলিয়ে কতগুলো সক্রিয় ডাকাতদল ছিল, দলের কোন দলে কত জন সদস্য ছিল, তাদের কার্যকলাপে কী কী বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল, সব আছে। এই বইয়ের এক পাতায় ছাপা আর ঠিক তার পরের পাতা সাদা অর্থাৎ সেই সব ডাকাতদল সম্পর্কে তৎকালীন পুলিশ বাহিনী যাতে নিজেদের হাতে আপডেট নোট লিপিবদ্ধ করতে পারেন সেই জায়গা করে দেওয়া। এই ধরনের ৩০-৩২টি বই জমেছে অভিজিতের সংগ্রহশালায়৷

Advertisement

আরও পড়ুন: নাইসেড-এ করোনা টিকা পরীক্ষার সূচনায় রাজ্যপাল, প্রথম ডোজ নেবেন ফিরহাদ হাকিম

ইতিহাসপ্রেমী অভিজিতের ইচ্ছে এই সব দুষ্প্রাপ্য নথি-বই সব সংরক্ষিত হোক। তাঁর কথায়, ‘‘আমার তো বদলির চাকরি। তাই নিজস্ব উদ্যোগে সংগ্রহশালা করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে। সরকারি ভাবে যদি কোনও সংরক্ষণ করা যায়, সে ক্ষেত্রে আমি সর্বত ভাবে সাহায্য করব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই সব নথি সংরক্ষিত হলে বর্তমান প্রজন্ম উপকৃত হবে। আমি চাই, সাধারণ মানুষ দেশের ইতিহাস জানুক৷’’

আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে কবে মুখ খুলবেন শুভেন্দু, অপেক্ষায় পূর্ব মেদিনীপুর

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement