পাহাড়ের দরদস্তুর

পাহাড়ে বাজি আর জুয়া নতুন কিছু নয়। আইপিএল নিয়ে যেমন এই মরসুমেও উৎসাহের অন্ত নেই। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে তাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ‘এইচপিএল’। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং, সর্বত্র এই নিয়ে খাতা চালু হয়ে গিয়েছে বুকিদের।

Advertisement

কিশোর সাহা ও অনির্বাণ রায়

কার্শিয়াং ও মিরিক শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ০২:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

পাহাড়ে বাজি আর জুয়া নতুন কিছু নয়। আইপিএল নিয়ে যেমন এই মরসুমেও উৎসাহের অন্ত নেই। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে তাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ‘এইচপিএল’। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং, সর্বত্র এই নিয়ে খাতা চালু হয়ে গিয়েছে বুকিদের। এই কারবারের সঙ্গে যুক্ত একাধিক যুবক একান্তে জানালেন, চার পুরসভার ভোটকে বলা হচ্ছে ‘হিল পুরসভা লিগ’। সংক্ষেপে ‘এইচপিএল’।

Advertisement

পাহাড়ে এই টি-টোয়েন্টির ফল স্পষ্ট হয়ে যাবে আজ, বুধবার সকালেই। তার আগে বুকিদের খাতায় সমানে দর ওঠানামা করেছে দলগুলির।

কেমন সেই দরদস্তুর? আর রাজনৈতিক নেতারাই বা কী বলছেন? মোর্চার কয়েক জন নেতা জানান, দার্জিলিঙে তাদের ধারেকাছেও তৃণমূল ঘেঁষতে পারবে না। সেখানে তৃণমূলের পক্ষে বাজি ধরা মানে অতি মাত্রায় ঝুঁকি নেওয়া, একান্তে মানছেন অনেকেই। তবে মিরিকে মোর্চার বাজার তুলনায় খারাপ।

Advertisement

কার্শিয়াঙে মোর্চার পক্ষেই বাজি ধরার প্রবণতা বেশি। কিন্তু, কালিম্পঙে মোর্চা ক্ষমতা দখল করবে কি না, তার চেয়েও বেশি দরাদরি চলছে হরকাবাহাদুর ছেত্রীর জাপ ও তৃণমূলের মধ্যে কে কার চেয়ে বেশি আসন পাবে, তা নিয়ে।

অর্থাৎ, পাহাড়ের ভোটে যে একটা পাল্টা হাওয়া এসেছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে বাজির দরেও।

জিটিএ-র সদস্য অরুণ সিকচি অবশ্য বলছেন, ‘‘মিরিকে তৃণমূল নিজেদের ফেভারিট বলে দাবি করছে। ধৈর্য্য ধরুন, মানুষের রায় কোন দিকে যাবে, সেটা বুধবার দুপুরের আগেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’

সিকচি মনে করেন, পাহাড়ের সব পুরসভাতেই মোর্চা ফেভারিট। গত বারে সব ক’টা পুরসভাতেই বিরোধীদের হাত শূন্য ছিল। তবে এ বারে যে সেটা হবে না, তা বিমল গুরুঙ্গ নিজেই ভোটের দিন জানিয়েছেন।

উল্টো দিকে, হরকা বাহাদুরের দাবি, ‘‘বাজির দর নয়, মানুষের রায়ই শেষ কথা। পাহাড়ের বাসিন্দারা এখন পরিবর্তন চাইছেন।’’ তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি রাজেন মুখিয়ার দাবি, ‘‘এই যে বাজি ধরাধরির কথা শুনছেন, এর মানে কি! সকলেই বুঝেছেন, পাহাড়ের পিচ এ বার তৃণমূলের জন্য পুরোপুরি তৈরি।’’

চার পুরসভায় মোর্চা বনাম তৃণমূল লড়াইয়ে ফল কী হবে, তা নিয়ে নানা এলাকায় বেটিংয়ের কথা কিছু কিছু কানে এসেছে পুলিশ অফিসারদের একাংশেরও। তাঁরা জানাচ্ছেন, খোঁজ করা হচ্ছে।

যদিও দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পুলিশকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, স্পষ্ট কোনও অভিযোগ মেলেনি। তবে নজরদারি ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

এরই ফাঁকে কার্শিয়াঙের স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের এক প্রান্তে, একটু অন্ধকার ঘেঁষা জায়গায় দেখা মিলল তাঁর। হাতে নোট-বই। হিসেব করার ফাঁকে আঙুল চালিয়ে জেল লাগানো চুল মাঝে মাঝে ঠিক করে নিচ্ছেন। বাজির কথা জানতে চাইলে বললেন, ‘‘দার্জিলিং, কালিম্পঙে মোর্চা ফেভারিট, মিরিকে তৃণমূল। কার্শিয়াঙে সামান্য হলেও এগিয়ে রয়েছে মোর্চাই।’’ তার পরে মুচকি হাসলেন তিনি। বললেন, ‘‘এইচপিএল-এর এই উত্তেজনা কিন্তু আমরা খুব উপভোগ করছি!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement