ফাইল চিত্র।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় বসলেন এমএ, বিএড, গ্র্যাজুয়েট, এমনকি এমবিএ, বিবিএ উত্তীর্ণেরাও। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে ১২টি শূন্যপদে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ২২০০ জন আবেদনপত্র জমা দেন। আবেদনকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই উচ্চ শিক্ষিত। রবিবার শহরের ছ'টি জায়গায় পরীক্ষা হয়েছে।
শহরের ফণীন্দ্রদেব ইনস্টিটিউট, আনন্দ মডেল হাইস্কুল, সোনাউল্লা হাইস্কুল, সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুল, কদমতলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এবং আনন্দচন্দ্র কলেজ অব কমার্সে এ দিন নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। ছ'টি কেন্দ্রে ১৫,০১৩ জন লিখিত পরীক্ষায় বসেন বলে ব্যাঙ্কের মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান।
জলপাইগুড়ি ও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকেও পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন অনেকেই। অঙ্ক, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষা হয়েছে। সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন ছিল পৃথিবীর উষ্ণতম মহাদেশ কোনটি? ইন্দিরা গাঁধীর সমাধিক্ষেত্রের নাম কী? ভারতের কোথায় প্রবাল প্রাচীর দেখতে পাওয়া যায়?
ধূপগুড়ি থেকে আসা মোনালিসা ঘোষ বাংলায় এমএ করে বিএড করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘চাকরি কোথায়! চাকরির জন্য হন্যে হতে হচ্ছে। তাই এখন আর শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা না ভেবে যে কোনও চাকরির পরীক্ষাতেই বসছি।’’
শিলিগুড়ি থেকে বাইক নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন দেবাশিস বর্মণ। এমএ পাশ করে তিনি গবেষণা করছেন। তাঁর কথাতেও একই সুর, ‘‘শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা ভেবে এখন আর কোনও লাভ নেই।’’
হলদিবাড়ি থেকে এসেছিলেন সুজন রায়। তিনি সংস্কৃতে অনার্স নিয়ে পাশ করেছেন। বেলাকোবা থেকে আসা গ্র্যাজুয়েট অরিন্দম সিংহ একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘বেসরকারি ব্যাঙ্কের চাকরির কোনও নিরাপত্তা নেই। কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তাই সরকারি ব্যাঙ্কে যদি চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবেও যোগ দিতে পারি সেই আশায় পরীক্ষা দিলাম।’’
ব্যাঙ্কের মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষিত যুবক-যুবতীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। কর্মসংস্থানের তেমন সুযোগ না পেয়েই উচ্চশিক্ষিতেরাও এখন যে কোনও পদের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন।’’ শীঘ্রই লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হবে বলে জানান তিনি। তার পর সরাসরি উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউয়ে ডাকা হবে বলে জানান তিনি।