—প্রতীকী চিত্র।
হঠাৎ করে খোলা বাজারে বেড়ে গিয়েছে চায়ের দাম। দার্জিলিঙের বড় পাতা থেকে ‘সিটিসি’ চায়ের দাম কেজিতে গড়পড়তা পাঁচ থেকে পনেরো টাকা বেড়েছে। দামবৃদ্ধির কারণ নিয়ে চা শিল্পের দাবি, উৎপাদন কমে যাওয়াতেই বাজারে চায়ের সরবরাহ কমেছে এবং চাহিদা-জোগানের নিয়মে দাম বেড়েছে। চা পর্ষদের পরিসংখ্যানে প্রথম ‘ফ্লাশ’-এ মার্চে ডুয়ার্স-তরাইয়ের উৎপাদন মার খেয়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ এবং দার্জিলিঙে অন্তত ৪৫ শতাংশ। গত দু’-এক দিনে তাপমাত্রার পরিবর্তনের সুফল চা বাগানের উৎপাদনে মেলে কি না, সে দিকে তাকিয়ে চা শিল্প। মঙ্গলবার কলকাতার নিলাম কেন্দ্রে দেশের একটি বিখ্যাত চা প্রস্তুতকারী সংস্থার দার্জিলিং পাতার প্রায় ৭০ শতাংশ বিক্রি হয়নি। এমন ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন’ বলে দাবি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে মরসুমের শুরুতেই চায়ের বাজারে শুরু হয়েছে অনিশ্চয়তা।
‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর অন্যতম কর্তা জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, “দার্জিলিং চা পাতা নিলামে বিক্রি হচ্ছে না এমন পরিস্থিতি শেষ কবে হয়েছে তা দেখতে হবে।” চা পর্ষদের তথ্য বলছে, গত মার্চ থেকে এপ্রিলে শিলিগুড়ি, গুয়াহাটি এবং কলকাতা— তিন নিলাম কেন্দ্রেই পাতার দাম বেড়েছিল। তার পরে এপ্রিলের শেষ থেকে ফের দাম কমছে। যেহেতু মার্চের শেষ থেকে দাম বেড়ে গিয়েছিল এবং উৎপাদন কমায় জোগানও কমে গিয়েছিল, তাই নিলামে যত দাম বেড়েছে তার চেয়ে বেশি দাম বেড়ে গিয়েছে খোলা বাজারে। এক চা পরিচালক সংগঠনের কর্তার কথায়, “এই দাম বেড়েছে বাজারে। প্রস্তুতকারীরা বেশি দাম পাননি।” চা পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরে মার্চে ৪২ লক্ষ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়েছিল ডুয়ার্সে। এ বছরে মার্চে উৎপাদন হয়েছে ৩২ লক্ষ কেজি। দার্জিলিঙে গত বছর মার্চে দু’লক্ষ ৮১ হাজার কেজি চা পাতা উৎপন্ন হয়েছে, এ বছরে হয়েছে দু’লক্ষ ২০ হাজার কেজি। ক্ষুদ্র চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “পাতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। তাই বর্ধিত দাম উৎপাদকেরা পাচ্ছেন না। উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কিন্তু লাভ আসছে না।”