শ্রদ্ধা: ডেপুটি সিএমওএইচ ১ রুদ্র ঈশ্বরারির মরদেহ ফুল দিচ্ছেন জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা। নিজস্ব চিত্র।
মাস খানেকেরও বেশি আগে আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরার বদলির নির্দেশ বেরিয়েছে। কলকাতা স্বাস্থ্যভবনে ডেপুটি ডিরেক্টর পদে বদলি করা হয়েছে তাঁকে। সরকারি নির্দেশে আলিপুরদুয়ারে তাঁর জায়গায় ডেপুটি সিএমওএইচ ১ রুদ্র ঈশ্বরারি দায়িত্ব নেবেন বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বুধবার রাতে মৃত্যু হল রুদ্রর। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তার দায়িত্ব এ বার কার হাতে থাকবে, শোকের আবহেও স্বাস্থ্যকর্মীদের চর্চায় সেই প্রশ্নই এখন বার বার করে উঠে আসতে শুরু করেছে।
গিরীশচন্দ্রের আগে আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ ছিলেন পূরণ শর্মা। গত বছর জুনে, করোনার প্রথম ঢেউ চলাকালীন তাঁকে কলকাতার পাস্তুর ইনস্টিটিউটে বদলি করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সেই সময় সরকারি নির্দেশে পূরণ শর্মাকে জেলার এক ডেপুটি সিএমওএইচকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু গিরীশচন্দ্রের ক্ষেত্রে তেমন কোনও নির্দেশ রাজ্য থেকে আসেনি বলেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। ফলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নতুন করে কোনও আধিকারিককে আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ হিসাবে নিয়োগ না করা পর্যন্ত তাঁকেই হয়তো জেলা স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ পদ সামলাতে হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পূরণ শর্মা বদলি হয়ে যাওয়ার পরে গত বছর জুনেই পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আলিপুরদুয়ারে বদলি হন গিরীশচন্দ্র বেরা। তারও পরে জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ারে বদলি হয়ে আসেন ডেপুটি সিএমওএইচ রুদ্র ঈশ্বরারি। গত ২ অগস্ট গিরীশচন্দ্রের বদলির নির্দেশের পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ হিসাবে রুদ্র ঈশ্বরারিরও পদোন্নতির নির্দেশ বেরোয়। স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, অগস্টের মাঝমাঝি সময়েই দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। সিএমওএইচের দায়িত্ব গিরীশচন্দ্র বেরাই সামলাতে থাকেন।
রুদ্রবাবুর মৃত্যুর জেরে আলিপুরদুয়ারে এই নিয়ে ডেপুটি সিএমওএইচের দু’টি পদ ফাঁকা হয়ে গেল। গিরীশচন্দ্র বেরা বৃহস্পতিবার বলেন, “দফতরের শীর্ষ কর্তারা নিশ্চয়ই বিষয়টি দেখছেন। তাঁরা যে ভাবে নির্দেশ দেবেন, সে ভাবেই ব্যবস্থা হবে।”
এই ঘটনার পরেও আলিপুরদুয়ারে করোনা বিধি ভাঙার ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। অভিযোগ, বৃহস্পতিবারও আলিপুরদুয়ার শহর-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মাস্ক ছাড়া বহু মানুষ রাস্তায় ছিলেন। বিভিন্ন জনবহুল জায়গায় শিকেয় উঠেছিল দূরত্ববিধি। দুয়ারে সরকারের শিবিরেও উপভোক্তাদের অনেকের থুতনিতে মাস্ক ঝুলছিল। সিএমওএইচ বলেন, “মাথায় রাখতে হবে, করোনা এখনও চলে যায়নি। সবাইকে অক্ষরে অক্ষরে বিধি মেনে চলতে হবে।”