হরকা বাহাদুর ছেত্রী। —ফাইল চিত্র
পাহাড়ের স্থায়ী সমাধানের বিষয়টিকে সামনে রেখে বিজেপি রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তুললেন কালিম্পঙের প্রাক্তন বিধায়ক ও জাপের সভাপতি হরকা বাহাদুর ছেত্রী। গত শনিবার কালিম্পঙে এক ঘরোয়া আলোচনায় হরকা বলেন, ‘‘১৫ বছর ধরে সাংসদ নিয়ে গেলেও যে দল আলাদা রাজ্যের শব্দটা মাত্র ইস্তাহারে লিখতে পারে না, সেই দল পাহাড়ের জন্য কিছুই করবে না।’’ সম্প্রতি বিনয়পন্থী মোর্চাও দাবি তুলেছে যে বিজেপি পাহাড়ে স্থায়ী সমাধান বলতে কী চাইছে তা স্পষ্ট করুক। প্রায় সেই দাবিই তুলেছেন হরকাও।
তিনি জানান, বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কেন্দ্রের হাতে থাকলেও আজ অবধি ১১টি জনজাতিকে তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আলাদা রাজ্যের বিষয়টি কেন্দ্রের এক্তিয়ারভুক্ত। লোকসভায় বিল এনে তা আলোচনা হচ্ছে না। হরকার কথায়, দার্জিলিঙের বর্তমান সাংসদ দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন। তাই ২০২৪ সালের জন্য সুব্রহ্মণ্য স্বামীকে গোর্খাদের সমব্যথী করে আগাম ময়দানে নামিয়ে রাখা হল।
চলতি মাসেই পাহাড় সমস্যার সমাধান নিয়ে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রক্ষণ্য স্বামী সরব হন। তিনি ট্যুইট করেন, বিজেপি ২০১৪ থেকে বিভিন্ন রাজ্যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পূরণ করার সময় এসেছে। এরমধ্যে গোর্খাল্যান্ডের দাবি রয়েছে। এর সমাধান হিসাবে দার্জিলিংকে আলাদা কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল করাটা জরুরি। দলকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ বিস্তাও লোকসভায় বার দু’য়েক স্থায়ী সমাধানের বক্তব্য রাখেন। কিন্তু স্থায়ী সমাধান কী হবে তা তিনি বলেননি।
হরকাবাহাদুরের প্রশ্ন, ‘‘একসময় আলাদা রাজ্য চেয়ে সুবাস ঘিসিং পার্বত্য পরিষদ পান। পরে ষষ্ঠ তফশিল এবং আলাদা রাজ্যের ফের দাবি ওঠে। তাতে দুই দফায় পাহাড়ে জিটিএ হল। এ বার স্থায়ী সমাধান মানে কী! কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল না কি শুধু রাজনীতি।’’ কালিম্পঙের প্রাক্তন বিধায়ক জানিয়েছেন, বিজেপি নানাভাবে কৌশলে শুধু বিষয়টিকে আলোচনায় তুলে আনছে। আর ভোট এলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে একজন করে সাংসদ পাহাড় থেকে জিতিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আর রাজ্য সরকার বাংলার বিভাজনের বিরুদ্ধে ঘোষণা করে সমতলে নিজেদের রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘রাজ্য ভাঙার চক্রান্ত তৃণমূল সর্বশক্তি দিয়ে রুখবে।’’ বিজেপির তরফে এ দিন কেউ পাহাড় নিয়ে মন্তব্য করেননি।