বেহাল: কচুরিপানায় ভরেছে রসিকবিল। নিজস্ব চিত্র
শীত পড়তেই শুরু হয়ে যায় পর্যটনের মরসুম। ২৫ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকদের ঢল নেমে যায়। কিন্তু তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত সরকারি অতিথিশালা প্রায় ছয় মাস ধরে বন্ধ। অভিযোগ, বুকিং করা যাচ্ছে না কোনওভাবেই। অতিথিশালাটি থেকে এখন ব্লক প্রশাসনের আয় নেই বললেই চলে।
বিডিও ভগীরথ হালদার বলেন, ‘‘অতিথিশালার কর্মীদের মারধর করে বের করে দেয় স্থানীয়েরা। আমি কর্মীদের নিয়ে পাঁচবার অতিথিশালাটি খুলতে গিয়েছি। প্রতিবারই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি কর্মরত কর্মচারীদের বাদ দিয়ে তাদের থেকে লোক নিয়োগ করতে হবে। তবেই খুলতে দেবে। চেষ্টা করছি পর্যটন মরসুমের আগে যাতে খোলা সম্ভব হয়।’’
তুফানগঞ্জ মহকুমার ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্র রসিকবিল মিনি জু। এখানে রয়েছে বাঘ, হরিণ, ঘরিয়াল। আগে বড় বড় খাঁচায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ছিল। এখন তাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে। তারও চাঙর ভেঙে পড়ার জোগাড়। অভিযোগ, এই পর্যটক কেন্দ্রের বিরাট ঝিলে আগে বোটিং করা গেলেও এখন সে সুযোগও মিলছে না আর। বন দফতরের অতিথিশালা থাকলেও তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের অন্তর্গত অতিথিশালাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। পাশে থাকা ব্লক প্রশাসন পরিচালিত শিশু উদ্যানও ব্যবহারের অনুপযোগী। সব মিলিয়ে এক প্রকার হতাশ পর্যটকেরা।
‘‘শুনেছিলাম রসিকবিল পর্যটকদের জন্য খুব ভালো জায়গা। কিন্তু এসে হতাশ হলাম। পরিকাঠামো সঠিক নয়। পরিযায়ী পাখি নেই। হরিণ বাঘের চেহারা খুব খারাপ। নতুন করে সাজিয়ে তোলা উচিত রসিকবিলকে।’’ বললেন রসিকবিলে ঘুরতে আসা অবসরপ্রাপ্ত ইন্ডিয়ান নেভির কর্মচারী চিত্তরঞ্জন দাস। বিজেপি নেতা উৎপল দাস বলেন, ‘‘আমরা সমাধানের জন্য গিয়েছিলাম। বিডিওর সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। স্থানীয়দের তিনি গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। বিডিও চাইলে আমাদের সাহায্য নিতে পারে।’’
কোচবিহার বনদফতর অ্যাডিশনাল ফরেস্ট অফিসার রাজু রায় জানান, রসিকবিল মিনি জুতে সৌন্দর্যায়নের জন্য একাধিক মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছে। কিচেন কাম সেন্টার, ট্রিটমেন্ট রুম, ময়নাতদন্তের ঘর সবই আছে। ডিয়ার গার্ডেনকে আরও এগিয়ে আনা হচ্ছে। চারদিকে বাউন্ডারি ওয়ালের চিন্তাভাবনা রয়েছে যেটা খুব দরকার। দু’টো সিলভার ফিজেন্ট পাখি
আনা হয়েছে দার্জিলিং থেকে। সম্পূর্ণ পরিকাঠামো সুন্দরভাবে রূপায়িত হতে আরও এক বছর লাগবে।