মন্ত্রীর দফতরে অভিভাবকেরা। — নিজস্ব চিত্র
মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের মুখে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন পড়ানো যেন বন্ধ হয়ে না যায়, সেই আর্জি জানালেন অভিভাবকদের একাংশ। শনিবার মৈনাক ট্যুরিস্ট লজে তাঁর দফতরে অভিভাবক এবং গৃহশিক্ষকদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলাদা ভাবে বৈঠক করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। পরে তিনি বলেন, ‘‘সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের টিউশন পড়ানো নিয়ে সরকারের বিধিনিষেধ রয়েছে। সঠিক কী নির্দেশ রয়েছে তা পরিষ্কার করে জানা দরকার। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলব।’’ বৈঠকের পরে অভিভাবকদের একাংশ সেখানে তাদের দাবিতে বিক্ষোভও দেখান।
এ দিন মন্ত্রীর কাছে আর্জি জানাতে গিয়েছিলেন শহরের একাধিক স্কুল পড়ুয়ার অভিভাবকেরা। তাদের মধ্যে মায়েরাই ছিলেন বেশি। পশ্চিমবঙ্গ গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির তরফে এ দিন বৈঠকে যান সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সুজয় বর্মন এবং আরও কয়েকজন প্রতিনিধি। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ টিউশন-এর নামে কালো টাকা রোজগার করছেন। তাঁদের কাছে না পড়লে প্রজেক্টে নম্বর দিচ্ছেন না। অথচ সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ রয়েছে, সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা কোনও ভাবেই গৃহশিক্ষকতা করতে পারবেন না। আমরা সেই দাবিই জানিয়েছি।’’
অভিভাবকদের তরফে শান্তনু মজুমদার, সুতপা ঘোষ, পলা মজুমদাররা জানান, পড়ুয়াদের ৩০ শতাংশ সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের কাছে পড়েন। বাকিরা গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়েন। শান্তনুবাবুর কথায়, ‘‘এ দিন মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন তিনি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। তবে আমাদের ছেলেমেয়েকে আমরা কার কাছে পড়াব সেটা তো আমরাই ঠিক করব।’’ তাদের দাবি, অনেক গৃহশিক্ষক স্নাতকোত্তর পাশ করেনি। তারা কী করে একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াবেন। তাই স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্য নিতেই হয়।
সম্প্রতি গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদের নামে গৃহশিক্ষকতার অভিযোগ করা হয় স্কুল পরিদশর্কের দফতরে। দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। এর পরেই অনেক স্কুল শিক্ষক টিউশন পড়ানো বন্ধ করে দিলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন বলে অভিভাবকদের দাবি।