GTA

তৃণমূলে জিটিএ-র কর্মীরা

দলীয় সূত্রের খবর, পাহাড়ে তৃণমূলের সংগঠন বাড়ানোর এই রাজনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিনয়পন্থী মোর্চা শিবির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০৪:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিনয় তামাংদের সঙ্গ ছেড়েছিলেন যে সব অস্থায়ী কর্মীরা, সোমবার তাঁরা চলে এলেন তৃণমূলের ছাতার তলায়। তিন দশকে প্রথমবার পাহাড়ের অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠনের কর্তৃত্ব নিল রাজ্যের শাসকদল।

Advertisement

সোমবার দুপুরে দার্জিলিং জিডিএনএস হলঘরে জিটিএ-র হাজার দু’য়েক অস্থায়ী কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন। সেখান থেকে ঘোষণা করা হয়, এ দিন থেকে ইউনাইটেড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন পুরোপুরি তৃণমূলের সঙ্গে মিশে গেল। তৃণমূল অনুমোদিত সংগঠন হিসেবে তারা এখন থেকে কাজ করবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ শান্তাছেত্রী এবং দার্জিলিং বিধানসভায় দলের আহ্বায়ক এনবি খাওয়াস। কালিম্পঙেও একই ভাবে যোগদান হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার জিটিএ অস্থায়ী কর্মীরা মিরিকেও তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।

এই নিয়ে অবশ্য বিনয় তামাং, অনীত থাপারা মুখ খোলেননি। ঘটনাচক্রে এ দিনই বিনয়, অনীতরা কার্শিয়াঙে পাল্টা সরকারি কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন। তবে দার্জিলিঙের তুলনায় সেখানে হাজির অনেকটাই কম ছিল। ‘জিটিএ কর্মচারী সংগঠন’ নামে তাঁদের সংগঠনের আওতায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। অনীত থাপা পাহাড়ের সরকারি কর্মীদের শুধু বলেছেন, ‘‘কোনও দল যদি স্থায়ী করার কথা বলে, তা হলে তারা মিথ্যা বলছে। গোটাটাই একটা প্রক্রিয়া। আমরা এই প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে কাজ করছি।’’

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, পাহাড়ে তৃণমূলের সংগঠন বাড়ানোর এই রাজনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিনয়পন্থী মোর্চা শিবির। সম্প্রতি অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণের বন্দোবস্ত না হওয়ায় তাঁরা বিনয়, অনীতের দিক থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করে। তাতে বিমল, বিনয় দুই ভাগে কর্মীরা ভাগ হচ্ছেন কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে। যদিও পুরনো কর্মীদের সংগঠনের তরফে নিরপেক্ষ থাকার দাবি করা হয়। রাজনৈতিক নেতারা অনেকে মনে করছেন, সরাসরি বিমল গুরুংপন্থী না হয়ে কর্মীরা তৃণমূলে নাম লেখালেন। আর গুরুং এখন তৃণমূলের দিকে থাকায় তাতে কোনও সমস্যা হল না। বিনয়, অনীতদের পক্ষে থাকা কর্মীদের সংগঠনটি কয়েক দিন আগে জানায়, লালকুঠিতে যাঁরা ক্ষমতায় থাকবেন, তাঁরা সেই দিকেই সমর্থন দেবে। এ দিন ইউনাইটেড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সুভাষ ছেত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারই তো আমাদের স্থায়ী করতে পারে। তাই মাঝে আর লালকুঠি কেন, আমরা সরকারি মূল দলের সঙ্গেই জুড়ে গেলাম।’’

জিটিএ সূত্রের খবর, দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলা মিলিয়ে জিটিএ-তে বর্তমানে ৪৪৯৩ জন কর্মী আছেন। এর মধ্যে প্রায় ৩ হাজার কর্মী কালিম্পং, দার্জিলিং, মিরিক মিলিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে গিয়েছে। কার্শিয়াং, তরাইয়ের মতো এলাকার কর্মীরা বিনয়, অনীতের সমর্থনে তৈরি সংগঠনের সঙ্গে আছেন। ৮০-এর দশকে সুবাস ঘিসিং পার্বত্য পরিষদ তৈরির সময় থেকেই এরা সকলেই অস্থায়ী কর্মী হিসাবে কাজ করছেন। তিন দফায় আন্দোলন হলেও কিছু হয়নি। তার পর থেকে এবারই প্রথম পাহাড়ের সরকারি কর্মীরা রাজ্যের শাসকদলে নাম লেখাল। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তার থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ হল, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পাহাড়ের কার্যভার বিনয়-অনীতদের হাতে ছেড়ে দিয়ে যে তৃণমূল কার্যত চুপ করে বসেছিল, তারা এ বারে নিজেদের সক্রিয়তা দেখাতে শুরু করল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement