ফাইল চিত্র।
বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। বুধবার দার্জিলিঙে সাড়ে তিন বছর পর সিংমারি পার্টি অফিসের তালা খুলে তা চালু করেন গুরুং। ২০১৭ সালে পাহাড়ের গোলমালের তা পুলিশ-প্রশাসনের তরফে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর পরে সমতলের লিম্বুবস্তিতে এসে জেলার সংখ্যালঘু বিভিন্ন সম্প্রদায়কে নিয়ে মোর্চার অধীনে শাখা সংগঠন গঠন করেছেন গুরুং। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি গোর্খাদের টানা কষ্ট দিয়ে এসেছে। এখন ভোটের আগে নানা কৌশল শুরু করেছে। কিন্তু দাবি করে বলছি, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে না। এলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’
এর পরেই বিজেপির বিরুদ্ধে পাহাড়ে দল ভাঙনের খেলা শুরুর অভিযোগ করেছেন। গুরুংয়ের অভিযোগ, ‘‘টাকা, পদের প্রলোভন চলছে। দল ভাঙানোর খেলাও শুরু হয়েছে। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ নেই। যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁরা মোর্চা থেকে দূরেই ছিল। বিজেপিকে এ বার শিক্ষা দিতেই হবে। সেই জন্য তৃণমূলস্তর থেকে কাজ করছি।’’
গত সপ্তাহ থেকে মোর্চায় ভাঙন শুরু হয়েছে। একদা গুরুং ঘনিষ্ঠ সরোজ থাপা, শঙ্কর অধিকারী, হেমন্ত গৌতমের মতো নেতারা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আবার দার্জিলিঙের আহ্বায়ক তিলকচন্দ্র রোকা তৃণমূলকে সমর্থন করতে পারবেন না বলে দল ছেড়েছেন। তিনিও গেরুয়া শিবিরে যেতে পারেন বলে গুরুং ঘনিষ্ঠদের অনুমান।
এই অবস্থায় আবার তৃণমূলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন গুরুং। তিনি বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। বিজেপি এখন পাহাড়ে ১১টি জনজাতিকে তফসিলি জনজাতির স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করছে। ভোট এলেই ওদের গোর্খাদের কথা মনে পড়ে। নইলে গোর্খাদের বিভাজন ছাড়া ওরা কিছু করে না।’’
দার্জিলিঙের সাংসদকে এ দিন ‘রাজনীতিতে শিশু’ বলে উল্লেখ করেন গুরুং। তেমনিই, আসন্ন বিধানসভা ভোটে শাসকদলের সঙ্গে বোঝাপড়া করেই চলবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনীত থাপার বৈঠকের পর তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদেরও সময়মতো আলোচনা হবে বলে গুরুং জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের আসনে কে কোথায় লড়বে, তা নিয়ে সময়মতো আলোচনা হবে। আমরা তৃণমূলের সঙ্গী হিসেবেই লড়ব। ভোটের পর পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিয়ে কাজ হবে। তাই আর বিজেপি দল ভেঙে, দল বাড়িয়েও কিছু এখানে করতে পারবে না।’’
গুরুংয়ের বক্তব্য প্রসঙ্গে অবশ্য বিজেপি নেতারা বিশেষ কিছু বলতে চাননি। রাজু বিস্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি গোর্খাদের প্রতি দায়বদ্ধ। পাহাড় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সঠিক সময় সিদ্ধান্ত নেবে।