কাজে: চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে জিটিএ সদর দফতরে অনীত থাপা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।
দার্জিলিঙের লালকুঠিকে ‘জনতার দরবার’ বলে ঘোষণা করলেন জিটিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপা। বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের শপথের পর শুক্রবার সকালে অনীত জিটিএ-র সদর দফতর লালকুঠিতে দিয়ে দায়িত্বভার বুঝে নেন। পরে তিনি সঞ্চবীর সুব্বার নাম ডেপুটি চিফ হিসাবে ঘোষণা করেন। জিটিএ-র প্রধান সচিব এস পুন্নমবলমের সঙ্গে বৈঠকের পর দলের বাকি জিটিএ সদস্যদের নিয়ে বসেন। সেখানে তিনি জানান, লালকুঠি এ বার থেকে জনতার দরবার এবং জনতার কাজের জন্য সব সময়লালকুঠি তৈরি থাকবে।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে অবধি অনীত রাজ্য সরকার মনোনীত জিটিএ-র প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৭ সালের পর এ বার ভোটে জিতে তিনি বিমল গুরুংয়ের পর জিটিএ-র দ্বিতীয় চিফ এগজিকিউটিভ পদে বসলেন। জিটিএ-র অফিসার ও কর্মীরা তাঁকে খাদা পরিয়ে স্বাগত জানান। ছোট পরিসরে পুজোও হয় জিটিএ দফতরে। পাহাড়ের নেতারা জানান, আশির দশক থেকে পার্বত্য পরিষদ বা জিটিএ-র সদর দফতর লালকুঠি সব সময় ক্ষমতায় ঘেরা থেকেছে। সুবাস ঘিসিং থেকে বিমল গুরুংয়ের আমলে লালকুঠি ছিল আমজনতার নাগালের বাইরে। এ বার তা ভাঙার ভাবনা অনীতের।
২০১২ সালের পর লালকুঠির চত্বরে পর্যটকদের ঢোকার অনুমতি দেওয়া হলেও পরে তা নিয়ন্ত্রিত হয়। ১৯৮৯ সালে জ্যোতি বসু রাজীব গাঁধীকে নিয়ে লালকুঠিতে গিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী পরামর্শ বিষয়ক কাউন্সিলের বৈঠক লালকুঠিতে করেন। এ ছাড়া, সব সময় লালকুঠি পাহাড়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থার সদর দফতর হিসাবেই বিবেচিত হয়েছে। ২০০১ সালে ঘিসিংয়ের উপর হামলার পর এর দেওয়াল উঁচু করে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। বিমল গুরুং দায়িত্বে বসে খুব একটা বদল করেননি। কিন্তু পাহাড়বাসীর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থেকে গিয়েছে লালকুঠি। এ দিন অনীত বলেন, ‘‘দার্জিলিঙের জিটিএ-র লালকুঠি জনতা দরবার হিসাবেই থাকবে। আমরা জনতার সেবক হিসাবে সবাই এখানথেকে কাজ করব।’’
জিটিএ-র চেয়ারে বসেই অনীত দলীয় কর্মীদের সঙ্গে জিটিএ সদস্যদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। দুর্নীতি এবং জিটিএ-র অডিট নিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্যকে সদর্থক ভাবে গ্রহণ করে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চালানোর জন্য দলের সব জিটিএ সদস্যকে নির্দেশ দেন অনীত। তিনি বলেন, ‘‘জিটিএ নিয়ে একটা নেতিবাচক প্রচার রয়েছে। রাজ্যপাল যা বলেছেন, তা আমি সদর্থক ভাবেই নিয়েছি। সরকারি টাকার প্রতি বছর অডিট হয়। স্পেশাল অডিটও চাইলে হতে পারে। আপত্তি নেই। সবাইকে পাঁচ বছর এই বদনাম ঘোচানোর জন্য কাজ করতে হবে।’’
প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মী, অফিসার, জিটিএ সদস্যেরা ছাড়াও প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতাকর্মীরাও লালকুঠিতে এসেছিলেন। পরে অনীত জানান, দল দলের জায়গায় থাকবে। দলীয় বিষয় সব পার্টি অফিসে। এখানে শুধু প্রশাসনিক কাজকর্ম চলবে।