উদ্বোধনের সময়েই রাস্তার এমন হাল দেখা গিয়েছে। — নিজস্ব চিত্র
কোথাও পড়ে রয়েছে এক গুচ্ছ প্ল্যাস্টিকের গ্লাস, তো কোথাও আবার বিড়ি কিংবা সিগারেটের প্যাকেট৷ কোথাও গুটখা, বিস্কুটের প্যাকেট কিংবা মোটা কাগজের বাটি বা প্ল্যাস্টিকের চামচ। কালিম্পং থেকে মুখ্যমন্ত্রী যখন জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তার দু’ধারের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন, ঠিক তখন সেই রাস্তার এমনই হাল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপানউতোর শুরু হয়েছে এসজেডিএ ও জলপাইগুড়ি পুরসভার মধ্যে৷ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরাও৷
জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তার দু’ধারে সৌন্দর্যায়নের প্রস্তাব দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই৷ বছরখানেক আগে সেই কাজ শুরু করে এসজেডিএ৷ এই এক বছরে প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা খরচ করে হাসপাতালের সামনে রাস্তার দু’ধারে ৩৭৩ মিটার ফুটপাথ, সেই ফুটপাথ আর রাস্তার মাঝে ৩৩৫ মিটার স্টিলের রেলিং এবং ৮৬টা ফ্লাওয়ার বেড তৈরি করা হয় ৷ ফ্লাওয়ার বেডগুলিতে নানা ধরনের গাছ লাগানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে৷
এ দিন কালিম্পং থেকে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবন চত্বরেও তখন একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক-সহ পুর চেয়ারম্যান ও এক ঝাঁক কাউন্সিলরকে৷ মঞ্চ থেকেই কাউকে কাউকে এমনও বলতে শোনা যায়, মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পটিকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ কিন্তু উদ্বোধনের সময়ই প্রকল্পটি বাস্তবে কী অবস্থায় পড়ে রয়েছে, তা নিয়ে তখন অনেকেরই কপালে ভাঁজ৷
ফ্লাওয়ার বেডগুলির বেশির ভাগেই ‘শোভা পাচ্ছে’ চায়ের গ্লাস, বিড়ি-সিগারেটের প্যাকেট কিংবা এঁটো কাগজের বাটি৷ ফুটপাথেও জমে রয়েছে আবর্জনা৷ এসজেডিএ-র এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা পুরসভাকে বুধবারই বলেছিলাম জায়গাটা পরিষ্কার করতে৷ শুনেছি, এ দিন সকালে পুরকর্মীরা সাফাই অভিযানেও এসেছিলেন৷ তার পরও দেখা যাচ্ছে, অনেক জায়গায় নোংরা জমে রয়েছে৷’’ এসজেডিএ-র এই দাবি অস্বীকার করেনি জলপাইগুড়ি পুরসভাও৷ চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “এ দিন অনুষ্ঠানে গিয়ে আমিও কিছু জায়গায় নোংরা পড়ে থাকতে দেখেছি৷ কিন্তু এটা বুঝতে হবে যে, এলাকাটি বেআইনি ভাবে দখল করে অনেক দিন ধরেই ব্যবসা চলছিল৷ তাই কিছু নোংরা এখনও রয়ে গিয়েছে। যখন আমরা জানতে পারি, এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন, সঙ্গে সঙ্গে সাফাইয়ের চেষ্টা করি৷ কিন্তু সময় এতটাই কম ছিল যে পুরোটা সম্ভব হয়নি৷”
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা৷ পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলর প্রমোদ মণ্ডল বলেন, “খোদ মুখ্যমন্ত্রী যখন একটি সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন, তখন সেটি অন্তত পরিচ্ছন্ন তো থাকবে! হাসপাতালের সামনে যেটা হল, তা কিন্তু জলপাইগুড়িরই লজ্জা৷”