দখল-সরাতে: ফুটপাত দখল করে থাকা তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শনিবার শিলিগুড়িতে। ছবি: স্বরূপ সরকার
শহরের ফুটপাত দখল ও যানজট সমস্যা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। কেন এর সমাধান হচ্ছে না তা নিয়ে মন্ত্রী ও মেয়রের মধ্যে একাধিকবার তরজাও হয়েছে। এ বার ফুটপাতের দখল তুলতে নিজেই রাস্তায় নামলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। শনিবার শিলিগুড়ির কোর্টমোড় থেকে কাছারি রোড এবং হাসমিচক থেকে হিলকার্ট রোড ধরে সেবক মোড় পর্যন্ত পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করেন মন্ত্রী। তাঁর উপস্থিতিতে ফুটপাত থেকে তুলে দেওয়া হয় দোকানগুলোকে। কিছু ব্যবসায়ীকে সাবধান করা হয়। তবে অভিযোগ, মন্ত্রী এবং পুলিশ অভিযান চালিয়ে চলে যাওয়ার ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই ফের আগের মতো ফুটপাত জুড়ে কারবার শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। অবশ্য ফুটপাত দখলমুক্ত করতে লাগাতার অভিযানের আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।
এ দিকে শহরের ফুটপাত দখল এবং ট্রাফিক সমস্যা নিয়ে মন্ত্রী ও মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কাজিয়া শুরু হয়েছে। পর্যটনমন্ত্রীর অভিযোগ, ফুটপাতের দখল তোলার কথা পুরসভার। পাল্টা মেয়র বলেন, ‘‘হকাররাই কেবল যানজটের জন্য দায়ী আমি তা মানব না। পুরসভাকে কিছু না-জানিয়েই মন্ত্রী নিজের মতো গিয়েছেন।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘গৌতমবাবু শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নন, শিলিগুড়ির বিধায়কও নন। তিনি পর্যটন মন্ত্রী। পর্যটকদের সুবিধা দেখবেন। ট্রাফিক সমস্যা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। মুখ্যমন্ত্রীর নজরে পড়তে, কাছাকাছি আসতে এসব করছেন। সম্প্রতি উনি অনেক পদ খুঁইয়েছেন। সেগুলো সামলান।’’
বিধান মার্কেটে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পর্যটমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও তিনি ‘বাস ফেল’ করেছেন বলে জানিয়েছিলেন মেয়র। এ দিন পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোথাও ফুটপাত দখল করা যাবে না। বেআইনি পার্কিং হবে না। ওই কাজ পুরসভার। কিন্তু করতে হচ্ছে আমাকে। নিয়মিত এই অভিযান চালানো হবে।’’ মেয়রের প্রশ্নের জবাব দিতে চান না বলে জানান তিনি। জানান, মেয়রের কথার জবাব দেবেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা।
কাছারি রোডে, হাসপাতাল মোড়ে একাধিক ফুলের দোকান এবং চা, খাবারের দোকান রয়েছে। হাসমিচক মোড়ে চারাগাছের নার্সারি রয়েছে। হাসপাতালের ঠিক উল্টো দিকে ওষুধের দোকানগুলোর সামনে বেআইনি পার্কিং রয়েছে। সেগুলো সরাতে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। এ দিন তাঁর সঙ্গে পুলিশ বাহিনী নিয়ে ছিলেন শিলিগুড়ি কমিশনারেটের ডিসি (ট্রাফিক)। মন্ত্রীর সঙ্গে দলীয় কাউন্সিলর এবং আইএনটিটিইউসি নেতারা ছিলেন। হাসপাতালের কাছে ফুটপাতের উপর একটি খাবারের দোকান তুলতে বলায় এক মহিলা মন্ত্রীর সামনেই চিৎকার জুড়ে দেন। হিলকার্ট রোডে অনেক ব্যবসায়ী ফুটপাতের উপর দোকানের সামগ্রী সাজিয়ে রাখেন। তা সরাতে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। অবিলম্বে কাউন্সিলর এবং আইএনটিটিইউসি সভাপতি অরূপরতন ঘোষকে নিয়ে বসে রবিবারের মধ্যে ফুটপাত থেকে হকারদের সরাতে উদ্যোগী হতে বলেন তিনি। অম্বিকানগরের এক বাসিন্দা সত্যেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ফের যাতে দখল না হয়, তা দেখতে হবে।’’