—ফাইল চিত্র।
ক্ষোভ সামলাতে হবে জেলার। সেই দায়িত্ব এ বারে দেওয়া হল পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে।
সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসেই ক্ষোভের আঁচ পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সামনে ভোট। এখন ক্ষোভ সরিয়ে রেখে সমন্বয় করে চলতে হবে। কিন্তু এই দায়িত্ব কে নেবেন? গৌতম দেবকে তখন নির্দেশ দেন দলনেত্রী। গৌতম শিলিগুড়িতে থাকলেও তিনি যে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক, সেটি জলপাইগুড়ি জেলায়। দলনেত্রী জানান, জেলার বর্তমান সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী সম্মানীয় নেতা, তবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা দলের নেতা-কর্মীদের থেকে ক্ষোভ শোনার দায়িত্ব গৌতম নিন।
দলের এক নেতার কথায়, “সভায় মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তার অর্থ হল গৌতম দেব-ই এখন দলের জেলা কমিটির মাথায় থাকবে। তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করে কোনও সিদ্ধান্ত বা কমিটি রদবদল হবে না। কারও কোনও ক্ষোভ থাকলে গৌতমবাবু তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন, কারও কোনও ক্ষোভ থাকলে সেই নেতাও গৌতমবাবুকে সে সব জানাবেন, এমনটাই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।”
গত কয়েক দিন ধরে ময়নাগুড়ির বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী ক্ষোভ জানিয়েছিল পিকে এবং জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, পূর্ত দফতরের পরিদর্শন বাংলোর সভায় এ দিন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অনন্তদেবের কাছে জানতে চান, কেন তিনি সংবাদমাধ্যমে বারবার মুখ খুলেছেন। এ দিন বৈঠক থেকে বেরিয়ে অনন্তদেব কোনও মন্তব্য করতে চাননি। একাধিক প্রশ্নেও তাঁর একটিই উত্তর, “নো কমেন্টস।” দলের একটি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কর্মিসভার মাঠে দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ লিখে চিঠি দিতে পারেন।
গত লোকসভা ভোটের নিরিখে তৃণমূলের মাথাব্যথার অন্যতম বড় কারণ দুই জেলার চা বলয়। সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিকদের জন্য আবাসন প্রকল্প চা সুন্দরীর ঘোষণা করেছেন। এ দিন দলের সব ক’টি সংগঠনকে তিনি ফের এক হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। জলপাইগুড়ির এক নেতার কথায়, “দলের চা শ্রমিক সংগঠনগুলি নিজেদের মধ্যেই মারামারি করে। তার ফলে দলের ক্ষতি হয়। এ কথা দিদিকে জানিয়েছি।” মুখ্যমন্ত্রী এ দিনও সকলকে একসঙ্গে ‘ইউনিয়ন’ করতে বলেছেন। তবে চা বলয়ের তৃণমূল নেতারা আরও একটি বিপদ দেখছেন। সম্প্রতি বিমল গুরুং অনুগামীরা ডুয়ার্স এবং আলিপুরদুয়ারের চা বলয়ে সক্রিয় হয়েছেন। তৃণমূল নেতাদের দাবি, গুরুং তৃণমূলকে সমর্থনের কথা বললেও তাঁর অনুগামীরা মোর্চার পতাকার সঙ্গে তৃণমূলের পতাকা লাগাচ্ছেন না। এই উদ্বেগ দলীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলে খবর।
মঙ্গলবারের সভা রাজনৈতিক হলেও বেশ কিছু প্রশাসনিক আশ্বাসও শোনা যেতে পারে বলে তৃণমূল কর্মীদের আশা। এর মধ্যে জলপাইগুড়িকে পুরনিগম, ফালাকাটা বা ডুয়ার্সের কোনও জনপদকে পুরসভার মর্যাদা দেওয়ার ঘোষণা থাকতে পারে বলে খবর।