দিল্লি যাওয়ার পথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিমল গুরুং, রোশন গিরিরা। — নিজস্ব চিত্র।
দিল্লিতে দার্জিলিং পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান চেয়ে ধর্নায় বসতে চলেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। চলতি মাসের ৪ থেকে ৬ তারিখ ধর্না চলবে যন্তর মন্তরে। তাতে যোগ দিতে বুধবার দিল্লির রওনা হওয়ার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং। বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘২০০৯ , ২০১৪ এবং ২০১৯-এর মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই। এ বার সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।’’
পঞ্চায়েত ভোট মিটতেই এ বার পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান চেয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ বৃদ্ধির পথে হাঁটা শুরু করে দিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। দাবি আদায়ে দিল্লি গিয়ে ধর্নার কথা ঘোষণা করেছিলেন গুরুং। সেই অনুযায়ী বুধবার দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন গুরুং-সহ দলের পদাধিকারীরা। সম্প্রতি পাহাড়ের পঞ্চায়েত ভোটে একক ভাবে নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করতে ব্যর্থ হয়েছে গুরুংয়ের মোর্চা। অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার রমরমার আমলে পাহাড়ে এক অর্থে কোণঠাসা একদা জিটিএ প্রধান গুরুং। দলের প্রভাব ক্রমশ কমছে। ঘুরে দাঁড়াতে পাহাড়ের স্থায়ী সমাধানের দাবিকে সামনে রেখে দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন গুরুং। আর তাই লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করে দিল্লি গিয়ে প্রতিবাদ সংগঠিত করার প্রয়াস নিয়েছেন গুরুং।
দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে গুরুং বলেন, ‘‘নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমরা দিল্লি যাচ্ছি। সংসদের বাদল অধিবেশন চলাকালীন দেশের রাজধানীতে নিজেদের দাবি তুলে ধরব। মূলত মহিলা মোর্চাই এই কর্মসূচি নিয়েছে। ধর্নার মাধ্যমে মোদী সরকারকে বার্তা দিতে চাই। এত বছর বিজেপির সঙ্গে ছিলাম কিন্তু বিজেপি আমাদের কী দিয়েছে? বিজেপি নির্বাচনী ইস্তাহারে যে কথা লিখেছিল, তার কী হল? এই প্রশ্ন করতেই আমরা দিল্লি যাচ্ছি। ২০০৯, ২০১৪ অথবা ২০১৯-এর মতো পরিস্থিতি এখন পাহাড়ে আর নেই। এ বার সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। সিদ্ধান্ত না জানালে আমাদের সমাধান বার করতে হবে। ১৫ অগস্টের পর বাকি সিদ্ধান্ত জানাব।’’
তবে, লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করলেও আপাতত ইন্ডিয়া বা এনডিএ— কোনও জোটেরই শরিক হতে চাইছেন না গুরুং। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জাতীয় স্তরে স্বীকৃতি নয়, ইদানীং গুরুং চাইছেন পাহাড়ে প্রভাব ফেরাতে। আর তাই তাঁর দিল্লিযাত্রা। কিন্তু পাহাড়ে রাজনৈতিক ভাবে কোণঠাসা গুরুংয়ের এতে কোনও সুবিধা হবে কি? প্রশ্ন কিন্তু থাকছেই।