যার ছবি দিয়ো পোস্ট করা হয়েছিল, সোমবার তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে।
নেটমাধ্যমে এক স্কুলছাত্রীর ছবি দিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা লেখার অভিযোগ উঠল এক কিশোরীর বিরুদ্ধে! ঘটনাচক্রে, যার ছবি দিয়ে পোস্ট করা হয়েছিল, সোমবার তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। ওই পড়ুয়ার পরিবারের দাবি, সম্মান হারানোর ভয়ে শিক্ষক দিবসের দিনই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। প্রাথমিক তদন্তেও পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেছে ওই পড়ুয়া। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়ার ব্লকের ফর্সা লাইনের ঘটনা। এ নিয়ে বিধাননগর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
মৃত কিশোরীর নাম অনিষা কিসকোট্টা। বয়স ১৭ বছর। সোমবার রাতে অনিষাকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যেরা। বিধাননগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিধাননগর থানার পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, অনিষার একটি ছবি নেটমাধ্যমে পোস্ট করেন টিনা নামে একটি মেয়ে। ছবির নীচে অশ্লীল কিছু মন্তব্যও করা হয়। টিনার সঙ্গে এই ঘটনায় অন্য এক যুবকও জড়িত ছিল বলে অভিযোগ। পোস্টটি চোখে পড়ে যায় অনিষার। অনিষার দিদি চুমকি নাগেসিয়া বলেন, ‘‘শিক্ষক দিবস পালন করে বিকেলের পর বাড়িতে ফেরে বোন। কাউকে কিছু জানায়নি। সন্ধ্যার পর আত্মহত্যা করে।’’
চুমকি আরও জানিয়েছেন, বোন কেন আত্মঘাতী হল, তা জানার চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘টিনা নামের একটি মেয়ে আমার বোনের ছবি নিয়ে নেট মাধ্যমে নোংরা কথা লিখেছিল। তাদের সঙ্গে কী হয়েছে, তা আমরা জানি না। টিনার সঙ্গে একটা ছেলেও জড়িত রয়েছে। আমার বোনকে আমরা আর ফিরে পাব না। তবে আগামী দিনে এমন ঘটনা যেন কোনও মেয়ের সঙ্গে না ঘটে, তার জন্য দোষীদের শাস্তি চাই।’’
অন্য দিকে, মৃতার বান্ধবী রিয়া তির্কে বলেন, ‘‘অনিষা আমায় ফোন করার পর আমিও সেই পোস্ট দেখেছি। এর পর আমি টিনাকে ফোন করে বলি, কেন অনিষাকে জড়িয়ে এ ধরনের পোস্ট করা হয়েছে। সেই পোস্ট সরাতে বলি তাকে। এর পর সে পোস্ট ডিলিট করে। কিন্তু তার আগেই আমার বান্ধবী আত্মহত্যা করে। পড়াশোনা থেকে খেলাধুলো— সবেতেই ভাল ছিল অনিষা।’’
ঘটনার তদন্তে নেমেছে বিধাননগর থানার পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে পোস্ট।