সকাল সাড়ে সাতটা থেকে স্টেশন চত্বরে ভিড় দেখে অনেকেই খোঁজ নিচ্ছিলেন বিশেষ কেউ আসছেন কি না। বিশেষ করে যারা আত্মীয় পরিজনদের স্টেশন থেকে নিতে বা পৌঁছে দিতে এসেছেন।
বেলা ৯টা নাগাদ দার্জিলিং মেল নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দুই নম্বর প্লাটফর্মে ঢুকতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রীদের তালিকায় পর্যটন দফতরের দায়িত্ব পাওয়ার পর এ দিন প্রথম শহরে ফিরেছেন গৌতম দেব। ফুলের তোড়া, মালা নিয়ে উপস্থিত কয়েকশো মানুষ। ঠেলাঠেলি শুরু হয় ট্রেন দাঁড়াতেই। নির্দিষ্ট কামরার গেটে ভিড় করে দাঁড়িয়ে পড়লে সাধারণ যাত্রীরাও নামতে বিপাকে পড়েন। এনজেপি স্টেশন থেকে লাগোয়া রাস্তার ধারে সংবর্ধনা মঞ্চে ভিড়ের জেরে যান চলাচল বিপর্যন্ত হয়ে পড়ে। অন্তত ৩০ মিনিট বিপাকে পড়তে হয় ট্রেন যাত্রী থেকে পর্যটকদের অনেককেই।
বিষয়টি আঁচ করে মন্ত্রী নিজেই সংবর্ধনা মঞ্চে বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানের জন্য রাস্তায় যানজট হচ্ছে। তার জন্য অনেককে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাদের কাছে সমস্যার জন্য ক্ষমা চাইছি। দ্রুত অনুষ্ঠান শেষ করে এই জায়গা খালি করে দেব আমরা। যান চলাচলে যাতে সমস্যা না হয় তা দেখতে হবে।’’ সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে ফের হুডখোলা জিপে করে তিনবাত্তি, নৌকাঘাট মোড়।, বর্ধমান রোড, ঝঙ্কার মোড়, হিলকার্ট রোড়, কাছারি মোড়, চিলড্রেনপার্ক হয়ে মন্ত্রীকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়।
তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির নেতারা তো বটেই দার্জিলি জেলা কমিটির সভাপতি রঞ্জন সরকার, দলের কাউন্সিলরদের একাংশ তাঁদের অনুগামীদের নিয়ে এদিন হাজির ছিলেন স্টেশনে। স্টেশন চত্বরে ভিড় সামলাতে পুলিশ কমিশনারেটের পদস্থ কর্তারাও এসেছেন। ছিলেন পর্যটন দফতরের আধিকারিকদের কয়েকজন। তবে ঠেলাঠেলির চোটে স্টেশনের প্লাটফর্মে সংবর্ধনা জানানো অসম্ভব হয়ে ওঠে। অত্যুৎসাহীরা মন্ত্রীর গায়ে এসে পড়লে নিরাপত্তা রক্ষীরা বিপাকে পড়েন। মন্ত্রীকে কোনও ক্রমে ফুট ওভার ব্রিজ দিয়ে নেওয়ার সময় দুই পাশে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অনুগামীরা। তখনও ভিড়ের ঠেলা সামলাতে ব্যস্ত তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরা। এনজেপি স্টেশনে এস্কেলেটরের অংশে সিঁড়িতে থিকথিক করছে দলের কর্মী-সমর্থকেরা।
হুডখোলা জিপে পর্যটনমন্ত্রীকে তোলা হয়। সামনে পিছনে বাইকের মিছিল। মন্ত্রীর সঙ্গে জিপে ছিলেন দলের জেলা কমিটির সভাপতি রঞ্জন সরকার, যুব সভাপতি বিকাশ সরকার, দলের কাউন্সিলরদের কয়েকজন। স্টেশন লাগোয়া নেতাজি মোড়ের কাছে মঞ্চ গড়ে সংবর্ধনার আয়োজন করে তৃণমূলের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি শাখা। রাস্তার ধারে সংবর্ধনা মঞ্চের সামনে ভিড়ের চোটে আটকে পড়ে যান চলাচল। মন্ত্রীকে দলের বিভিন্ন শাখা কমিটির তরফে নেতা-কর্মীরা সংবর্ধনা জানান। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও রাখেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রেলের সঙ্গে কথা বলে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন চত্বরকে পরিবেশ বান্ধব হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। স্টেশনে যাতে একজন পর্যটকেরও সমস্যা না হয় তা দেখতে হবে। পর্যটন দফতরের দায়িত্বের জন্য ১৫ দিন কলকাতায় থাকতে হবে। বাকি ১৫ দিন শিলিগুড়িতে থেকে মালদহথেকে কোচবিহার আটটি জেলাতে কাজ করব।’’