ভাঙন মানিকচকের গ্রামে। — নিজস্ব চিত্র।
ভাঙনের কবলে একটা সময় ভিটেমাটি হারিয়ে নতুন জায়গায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল। এ বার ভাঙনের কবলে পড়ে সেই নতুন জায়গা থেকেও বাস্তুহারা হওয়ার উপক্রম মালদহের মানিকচক গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণপুরের বাসিন্দাদের।
বছর ১৪ আগে গঙ্গার ভাঙনের কবলে পড়েছিলেন নারায়ণপুরের সাহেবা বিবি, সাবির আলিরা। তাঁদের বসতবাড়ি, জমি সেই সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সর্বস্ব হারিয়ে তাঁরা আবার শুরু করেছিলেন নতুন জীবন। নারায়ণপুরের ঠিকানা ফেলে তাঁরা পশ্চিম নারায়ণপুর এলাকার বজ্রলালটোলা গ্রামে বাস করতে শুরু করেন। বৃহস্পতিবার ১৪ বছর আগের সেই দুঃসহ স্মৃতি ফিরে এল তাঁদের জীবনে। গঙ্গার ভাঙনে আবার তাঁরা সর্বস্ব হারানোর মুখে দাঁড়িয়ে।
১৪ বছর আগে নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে নারায়ণপুর গ্রাম। এ বার ভাঙনের ভ্রূকুটিতে বিপন্ন বজ্রলালটোলা গ্রামও। বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে গঙ্গা। জলস্তর বাড়তেই শুরু হয়েছে ভাঙন। বোল্ডার দিয়ে বাঁধানো পাড় ভেঙে গিয়েছে। ২০১২ সালে ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকায় অনেকেই পাকা বাড়ি তৈরি করেছিলেন। ভাঙনের কবলে পড়ে তাঁরা বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরে যাচ্ছেন। আবার ঠাঁইনাড়া হওয়ার আতঙ্ক গ্রাস করেছে বজ্রলালটোলা গ্রামকে। অনেকে সেই প্রস্তুতি নিতেও শুরু করেছেন। সেখানকার বাসিন্দা সাহেবা বিবির কথায়, ‘‘আমরা আশায় ছিলাম যে নদীতে বাঁধ দেওয়া হবে। কিন্তু এখন কোথায় যাব জানি না।’’
সাবির আলি নামে আরও এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এখানকার পরিস্থিতি খুব খারাপ। কোথায যাব তার ঠিক নেই। নদীর চেহারা দেখে মনে হচ্ছে এই সব জায়গা আর থাকবে না। নেতা-মন্ত্রীরা এই সব জায়গা দেখে গিয়েছেন। কিন্তু কিছু হয়নি।’’
মানিকচক বিধানসভার বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের পক্ষে এই ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যকে কোনও অর্থ বরাদ্দ করছে না। রাজ্য সরকার তার যৎসামান্য ক্ষমতা নিয়ে চেষ্টা করছে ভাঙন মোকাবিলা করার। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও সেচদফতরের কর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহনিয়া বলেন, ‘‘মানিকচকের ভাঙনের খবরে পেয়েছি। সেচ দফতরকে জরুরি ভিত্তিতে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’